ভোটে এবারও সেনা মোতায়েনের প্রক্রিয়া চলছে: ইসি আনিছুর - Southeast Asia Journal

ভোটে এবারও সেনা মোতায়েনের প্রক্রিয়া চলছে: ইসি আনিছুর

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

আগের জাতীয় নির্বাচনগুলোর মত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতা দিতে সেনা মোতায়েনের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান।

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে রোববার এক মতবিনিময় সভা শেষে তিনি বলেন, “সকল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল। এবারও সে একই ধারায় মোতায়েনের জন্য আমাদের প্রক্রিয়া চলছে।”

একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের আগে-পরে মিলিয়ে ১০ দিন বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার জন্য ‘এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’ বিধানের অধীনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর সেনাবাহিনী মোতায়েন রাখা হয়।

২০১৮ সালের ওই নির্বাচনে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন চাইলেও সেটি হয়নি।

এবারের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় সাড়ে ৭ লাখ সদস্যকে মোতায়েনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে ইসি। তবে তারা কবে মাঠে নামবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। ইসি আলোচনা করে ঠিক করলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করবে।

গত ২০ নভেম্বর ইসি সচিবালয়ে বৈঠকে নির্বাচনকালীন সম্ভাব্য নিয়োজিত সদস্যের সংখ্যা ও আগাম অর্থ ছাড় নিয়ে আলোচনা শেষে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, এবার আনসার সদস্য ৫ লাখ ১৬ হাজার জন, পুলিশ ও র‌্যাব এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন, কোস্টগার্ড দুই হাজার ৩৫০ জন, বিজিবি ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন থাকবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে অশোক কুমার বলেন, “সশস্ত্র বাহিনীর বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। সশস্ত্রবাহিনী ডেপ্লয় হলে পরবর্তীতে তা যুক্ত হবে। কোন বাহিনী কত দিনের জন্য মোতায়েন হবে, সে সিদ্ধান্ত হলে (ইসির সিদ্ধান্তের পর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারি করা হবে।”

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে সকালে বৈঠক করেন ইসি আনিছুর। এবারের জাতীয় নির্বাচন ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ’ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

“আপনাদের (সাংবাদিকদের) মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি ছোট-বড় হোক বিভিন্ন দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগ্রহ ব্যক্ত করেছে। এতে মনে হচ্ছে এবারের নির্বাচনে অনেকেই মাঠে থাকবেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। আর সে কাজটাই আমরা করছি। যাতে সুষ্ঠু সুন্দর গ্রহণযোগ্য করা যায়।

“এ নির্বাচন শুধু আমাদের চোখ দিয়ে দেখছি না। বিশ্ববাসীও দেখছে। এটি গ্রহণযোগ্য না করার কোনো বিকল্প নাই, যে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য করতেই হবে।”

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে আগামী ৭ জানুয়ারি। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।

দাবি অনুযায়ী নির্বাচন না হলে হরতাল-অবরোধের পুরনো কর্মসূচির পাশাপাশি ‘নির্বাচন প্রতিহতের’ ঘোষণাও দিয়েছেন দলগুলোর নেতারা।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আনিছুর রহমান বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দল আছে। তাদের নির্বাচন করা না করার এখতিয়ার আছে।

“কিন্তু নির্বাচন বানচাল করা, কাউকে আসতে বাঁধা দেওয়া, সে অধিকার কিন্তু কাউকে আইনে দেওয়া হয়নি। এরকম কেউ করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ নির্বাচন না করলে সেটা প্রার্থী কিংবা দলের সিদ্ধান্ত, তাই বলে কাউকে বাধা দেওয়া যাবে না।”

নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, “ভোটারদের আনা কিংবা উপস্থিত করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর না। এটা যারা নির্বাচন করবেন সেই প্রার্থী, নেতাকর্মী ও সমর্থকদের করতে হবে। ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।”

বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে তফসিল পরিবর্তনের ইঙ্গিতও দেন ইসি আনিছুর। তবে কোনো দলের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তফসিল নিয়ে কোনো আবেদন পাননি বলে জানান তিনি।

“যদি কোনো দল নির্বাচনের সময় নিয়ে কোনো কথা বলে, তাহলে সেটা বিবেচনা করা হবে, বিবেচনা করার মত এখনও সময় আছে।”

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, চট্টগ্রামের রেঞ্চ ডিআইজি নূরে আলম মিনা, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।