রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৪৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা - Southeast Asia Journal

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৪৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

হঠাৎ করেই উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো অস্থিরতা বিরাজ করছে। একদিনেই ৬ ঘণ্টার ব্যবধানে ৪ খুনের ঘটনা ঘটে মঙ্গলবার (০৫ ডিসেম্বর)। দুই সশস্ত্র গোষ্ঠী আরকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও)’র মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয় বলে দাবি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

এদিকে গত ১৫ দিনে ৯ খুনের ঘটনায় সাধারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে জেলা পুলিশ বলছে এসব ক্যাম্পের অভ্যন্তরীণ ঘটনা, স্থানীয়দের মধ্যে এই ঘটনার প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম।

একদিনেই ৩ টি পৃথক ঘটনায় ৪ টি খুন হয়েছে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। মঙ্গলবার (০৫ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে রাতের মধ্যে ৩টি ভিন্ন ক্যাম্পে ৬ ঘণ্টার মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ড গুলো সংগঠিত হয় বলে দাবি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

এদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদকবিরোধী অভিযানে ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা খুনের ঘটনায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনীসহ সংগঠনটির ৪৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বান্দরবানের মূখ্য বিচারিক হাকিমের আদালত।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) খুনের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করার পর এই আদেশ জারি করা হয়। এর পরদিনই (০৫ ডিসেম্বর) অস্থির হয়ে উঠে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে পরপর চারটি খুনের ঘটনা ঘটে ক্যম্পে।

আতাউল্লাহর গ্রেফতারি পরোয়ানার সাথে এই ঘটনাগুলোর সংশ্লিষ্টতা খোঁজ নিতে গিয়ে পাওয়া যায় একটি অডিও বার্তা। যেখানে রোহিঙ্গা ভাষায় জুনুনি বলেন,”আঁরার কওমের শত্রু যারা তারারে আর ছার দিয়া ন যাইবু। তোঁয়ারা মসোয়ারা গরো, ইতারারে কেন গরিবা গরো।” (আমাদের জাতির শত্রু যারা তাদের আর ছাড় দেওয়া হবে না। তোমরা পরামর্শ করে ওদের কি করবে করো।)

এসব বার্তা ও নির্দেশনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে তার অনুসারীরা বিভিন্ন কৌশলে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে বলে জানান রোহিঙ্গা অধিকার কর্মী ‘ক’ ( ছদ্মনাম)।

তিনি বলেন, ‘আতাউল্লাহ চায় না আমরা দেশে ফিরি। সে আমাদের ভাগিয়ে এনেছিলো এখানে। এখন যেহেতু আমাদের ঘরে ফেরার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে সে তার অনুসারীদের দিয়ে এসব অরাজকতা করাচ্ছে। আমরা সবাই আতঙ্কিত।’

৪, ১৫ ও ১৭ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ ঘটনা গুলোতে ৩ জনকে গুলি করে ও একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এতে আরো দুই রোহিঙ্গা গুরুতর আহত অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

নিহতদের স্বজনরা জানান, কিছু বুঝে উঠার আগেই এ হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। আল ইয়াকিন অর্থাৎ আরসার সদস্যরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি স্বজনদের।

এদিকে ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত ১৪ এপিবিএনের অতিরিক্ত ডিআইজি হারুন অর রশিদের কাছে জানতে চাওয়া হয় আরসা প্রধান জুনুনির উপর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির সাথে এ ঘটনার কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা। তবে তিনি এ ধরনের কোনো তথ্য নেই বলে জানান।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, ক্যাম্পের অভ্যন্তরীণ ঘটনার সাথে স্থানীয়দের মধ্যে যেন প্রভাব পড়তে না পারে তার জন্য পুলিশের তৎপরতা বিদ্যমান আছে।

এদিকে গত ১৫ দিনে ৯ খুনের ঘটনা ঘটেছে উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে। সাধারণ রোহিঙ্গারা আতঙ্কিত এসব ঘটনায়।