সেনাবাহিনীর সঙ্গে শত্রুতা দেশদ্রোহিতা

সেনাবাহিনীর সঙ্গে শত্রুতা দেশদ্রোহিতা

বিশ্ব শান্তিরসেনাবাহিনীর সঙ্গে শত্রুতা দেশদ্রোহিতাক্ষায় রোল মডেল বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

মো. জাকির হোসেন

২৩ মে জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও র‌্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। Torturers deployed as UN peacekeepers’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্রে অভিযোগ করা হয়েছে– মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের শান্তিরক্ষী মিশনে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এর আগে ২০২৩ সালের ৩ এপ্রিল র‌্যাবকে টার্গেট করে ডয়েচে ভেলে ‘বাংলাদেশের ডেথ স্কোয়াডের ভেতরের কথা’ নামে একটি তথ্যচিত্র প্রচার করে। আর ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট সুইডেনভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল নেত্র নিউজ সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইকে নিয়ে ‘আয়নাঘর’ নামে একটি তথ্যচিত্র প্রচার করে। তথ্যচিত্রের বর্ণনা মতে, ‘আয়নাঘর’ ডিজিএফআই পরিচালিত একটি গোপন বন্দিশালা। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের নিয়ে ডয়েচে ভেলের প্রচারিত তথ্যচিত্র অতীতের মতোই মিথ্যাশ্রয়ী সাজানো নাটক। মনগড়া কাহিনি ও অসত্য তথ্য সংবলিত ফিকশন থ্রিলার। সেনাবাহিনীর ইমেজকে বহির্বিশ্বে প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষ্যেই পরিকল্পিতভাবে এমন মিথ্যা তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে।

যেসব বিষয় বিবেচনা করলে সন্দেহাতীতভাবে এটিকে পরিকল্পিত মিথ্যা তথ্যচিত্র হিসেবে অভিহিত করা যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো–

এক. একটি বিষয় ধারণা করা যায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও ডিজিএফআইকে নিয়ে নির্মিত সব ফিকশনের সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত বাংলাদেশবিরোধী একটি চক্র। এই চক্রটির লক্ষ্যে হলো– বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা। যাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, সম্পর্ক ছিন্ন করে।

দুই. বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে তথ্যচিত্র বানিয়ে বিদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রচার করা হলো। অথচ অভিযোগের বিষয়ে সেনাবাহিনীর কোনও বক্তব্য নেওয়া হলো না। স্বাভাবিক ন্যায়বিচারের আবশ্যিক নীতি হলো, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার বক্তব্য প্রদানের সুযোগ থাকতেই হবে। অভিযোগের বিষয়ে সেনাবাহিনীর বক্তব্য নেওয়া না হলেও জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে তথ্যচিত্রে ধূর্ততার সাথে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সেনাবাহিনীর ফুটেজ ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রশ্ন হলো, কেন সেনাবাহিনীর বক্তব্য নেওয়া হয়নি? কারণ ষড়যন্ত্রকারীদের মিথ্যা গোমর ফাঁস হয়ে যাবে? মিথ্যা তথ্যচিত্র বানিয়ে টু পাইস কামাই করার পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

র‌্যাবকে নিয়ে ‘ডেথ স্কোয়াড’ শিরোনামে তথ্যচিত্রের ক্ষেত্রেও একইরকম মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিল বাংলাদেশবিরোধী গং। ডয়েচে ভেলের সাংবাদিক আরাফাতুল ইসলাম ঢাকা থেকে দুই জন জার্মান নারীকে সঙ্গে নিয়ে খুব ভোরে সূর্যের আলো ফোটার আগেই র‌্যাবের হাতে নিহত একরামের বাড়িতে যান। তারা একরামের স্ত্রী ও তার মেয়ের সঙ্গে কথা বলেন। এবং একরামের স্ত্রীর বক্তব্যকে বিকৃত করে ওই তথ্যচিত্রে ভুলভাবে উপস্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে একরামকে হত্যা করা হয়েছে বলে ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। কিন্তু একরামের স্ত্রী আয়েশা বেগম বলেন, ‘আমি এ ধরনের কোনও কথাই বলিনি। আমার বক্তব্য বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়েছে, আমার অনেক খারাপ লাগছে। আমি বলেছি এটা শুধু টেকনাফ-কক্সবাজারের মধ্যে হয়েছে।‘ (সময় নিউজ ডট টিভি, ১৯ এপ্রিল, ২০২৩)

১৭ কোটি মানুষের দেশের একজন অতি ব্যস্ত প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা। একরামের বা তার পরিবারের সঙ্গে কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই শেখ হাসিনার। একরাম বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য নন, বরং শেখ হাসিনার দলের একজন মাঠপর্যায়ের নেতা।

আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। বঙ্গবন্ধুকন্যা হয়তো ব্যক্তিগতভাবে একরামকে চিনতেনও না। ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোনও কারণে গণমাধ্যমে আলোচিত, পরিচিত কোনও মুখ ছিলেন না নিহত একরাম। এমন একজন মানুষকে একটি রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী হত্যা করার নির্দেশ দেবেন তা কি কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য?

ডয়েচে ভেলের এই তথ্যচিত্র নিয়ে আইনজীবী নিঝুম মজুমদার অনুসন্ধান করেছেন। এ বিষয়ে সময় টিভির অনলাইনে প্রতিবেদনও হয় (১৯ এপ্রিল, ২০২৩)। যেখানে একরামের স্ত্রী আয়েশা বেগম নিঝুম মজুমদারকে বলেন, ‘আমি এ ধরনের কোনও কথাই বলিনি। আমার বক্তব্য বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়েছে, আমার অনেক খারাপ লাগছে।’

আয়েশা আরও জানান, সাংবাদিক আরাফাত বলেছেন ভোরে না এলে তাদের সমস্যা হতে পারে, তাই তারা ফজরের সময় ওই বাড়িতে আসেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে অনেক ভালো ভালো কথা বলেছেন আরাফাত। জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে তারা অনেক লেখালেখি করেছেন, ভালো নিউজ করেছেন। তাই তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমতি নিয়েই এখানে আসতে পেরেছেন। কাকডাকা ভোরে যখন ডয়েচে ভেলের ওই দল একরামুল হকের বাড়িতে যায়, এর একটু পর পাশের বাড়িতে থাকা নিহত একরামুলের ছোট ভাই এহতেশামুল হক বাহাদুরের নজরে পড়ে বিষয়টি। তিনি দৌড়ে এসে জানতে চান তারা কারা, কেন এসেছেন?

তখন আরাফাতুল ইসলাম নিজেকে ডয়েচে ভেলের সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন। একরামুল হক সম্পর্কে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে এসেছেন বলে জানান। এ সময় বাহাদুর তাদের গতিবিধি ভিডিও করতে শুরু করেন। বাহাদুর সন্দেহ করেন, এখানে অস্বাভাবিক কিছু রয়েছে। একরামুল সম্পর্কে জানতে এত সকালে আসার দরকার ছিল না। কিছু একটা আছে বলেই তো চুরি করে এসেছে। তারা যে বক্তব্য নিয়েছে তা বিকৃত করে প্রচার করেছে। আমি ভিডিও করতে গেলে তারা পালিয়ে যায়।

ডয়েচে ভেলে ও নেত্র নিউজের যৌথ তথ্যচিত্রে র‌্যাবের যে দুজন কমান্ডারের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। শুধু অন্ধকার কক্ষে ছায়া আকারে বসে কথা বলছেন এমন দেখানো হয়েছে। পরিচয়হীন, মুখাবয়ব প্রদর্শনবিহীন ব্যক্তিরা যে র‌্যাবের কমান্ডার তার প্রমাণ কী? তারা যে বাংলাদেশবিরোধীদের ফিকশনের জন্য ভাড়া করা কেউ নয় তা অবিশ্বাস করবো কীভাবে? কমান্ডারের নাটক সাজানো এমন ব্যক্তিদের কথা কি বিশ্বাস করা যায়?

জনগণকে বিশ্বাস করাতে ওই ফিকশনচিত্রে নাফিজ মোহাম্মদ আলম নামে একজনকে ভুক্তভোগী সাজিয়ে সামনে নিয়ে এসেছে। নাফিজ মোহাম্মদ আলমের নামে হত্যা, মাদক ব্যবসা, বান্ধবীদের সঙ্গে মেলামেশার গোপন ভিডিও করে পর্নো ভিডিও বানানো এবং এসব ব্যবহার করে পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল করাসহ অন্তত ১০টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তিনি নিজেকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতেন।

২০১৭ সালে কিশোর আদনান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি এই নাফিজ। নাফিজ তার অপরাধ কর্মের জন্য র‌্যাবের হাতে আটক হয়েছেন। স্বভাবতই সে র‌্যাবের ওপর ক্ষিপ্ত। এমন একজন অপরাধীর একতরফা বক্তব্য কতটা গ্রহণযোগ্য?

তিন. সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নির্মিত তথ্যচিত্রে অপ্রাসঙ্গিকভাবে শ্রীলংকার উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী জেনারেল Shavendra Silva-কে ২০০৯ সালে শ্রীলংকার সেনাবাহিনী প্রধান নিয়োগ করা হয়েছে। ওই তথ্যচিত্রে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, শ্রীলংকা যেমন হত্যা ও নিপীড়নে যুক্ত সেনা সদস্যদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে পাঠিয়েছে, বাংলাদেশও তেমনি মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের শান্তি মিশনে পাঠিয়েছে।

শ্রীলংকার সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী দূরে থাক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি কোনোভাবেই তুলনীয় হতে পারে? শ্রীলংকায় দশকের পর দশক ধরে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ হয়েছে। আর গৃহযুদ্ধ মোকাবিলায় প্রধানত সেনাবাহিনী নিয়োজিত ছিল। গৃহযুদ্ধ মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর কৌশল নিয়ে দেশে-বিদেশে মারাত্মক সমালোচনা, অভিযোগ রয়েছে। অথচ দেশে-বিদেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা নন্দিত হয়েছে। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণকে বিতর্কিত করতেই মিথ্যা তথ্যচিত্রের আশ্রয়গ্রহণ।

চার. র‌্যাবকে নিয়ে নির্মিত ‘ডেথ স্কোয়াড’ তথ্যচিত্রের মতোই এখানেও সেনাবাহিনীর সদস্যদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসত্য বিষয় প্রতিষ্ঠিত করতে পরিচয়হীন, মুখাবয়ব প্রদর্শনবিহীন র‌্যাব সদস্যদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। এই সাজানো নাটক কোনোভাবেই কি গ্রহণযোগ্য?

তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা এবং ঝড়, বন্যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিদেশি সাহায্য নির্ভরতার বিপরীতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের যে ইতিবাচক ইমেজ গড়ে উঠেছে, তার অন্যতম কারণ হলো বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও তাঁর কালোত্তীর্ণ ৭ মার্চের ভাষণ, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বদলে যাওয়ার গল্প ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গর্বিত অংশগ্রহণ।

২০০৭ সালে ব্রিটিশ সাপ্তাহিক ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ‘ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ রাজনীতি এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বাইরেও যে বাংলাদেশের একটি পরিচিতি আছে তা বিশ্বের কাছে তুলে ধরার সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের নীল হেলমেট পরিধান করে দায়িত্ব পালন।’

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ এখন একটি ব্র্যান্ড। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের পেশাগত দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, সততা, সাহসিকতা ও মানবিকতার কারণে বিশ্বের মানুষের কাছে আজ তারা অনুকরণীয় মডেল। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। একবিংশ শতাব্দীতে এসে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সর্ববৃহৎ সেনা প্রদায়ক দেশ হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছে।

আমাদের শান্তিসেনাদের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ, তাদের কাজ, মানবিক গুণাবলি, শৃঙ্খলা এবং স্থানীয় জনগণের প্রতি শ্রদ্ধা এই সুনামের পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে। প্রতিটি সেনাসদস্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের একজন শান্তিদূত। আফ্রিকা এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের কারণে অন্যান্য দেশের সেনারা যেখানে গ্রহণযোগ্যতার সংকটে পড়েছে, সেখানে বাংলাদেশি সেনারা শুধু গ্রহণযোগ্যতা নয়, অর্জন করেছে স্থানীয় মানুষের ভালোবাসা-সম্মান। এই ভালোবাসার স্বীকৃতিস্বরূপ আইভরি কোস্টে স্থানীয় জনগণ তাদের একটি গ্রামের নাম রেখেছে রূপসী বাংলা।

হাইতিতে একটি শিশুর নাম বাংলাদেশ। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের নামে সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। সিয়েরা লিওনে বাংলা ভাষা পেয়েছে সেই দেশের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা।

বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা গড়ে তুলেছেন বাংলাদেশ মৈত্রী স্কুল, বাংলাদেশ সেন্টার। শান্তিরক্ষী ও বিভিন্ন সামরিক ইকুইপমেন্ট পাঠিয়ে বাংলাদেশ প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে। শান্তিরক্ষীদের বেতন ভাতা এবং ক্ষতিপূরণ ছাড়াও মিলিটারি কনটিনজেন্টের অস্ত্র, সরঞ্জাম, যানবাহন, তৈজসপত্রের জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক অর্থ পরিশোধ করা হয়। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের একটি খাত শান্তিরক্ষী মিশন।

বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য পরোক্ষ আর্থিক সুবিধাও তৈরি করেছে শান্তি মিশন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য কৃষি ও ওষুধ খাতে নতুন বাজার সৃষ্টি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে এই মিশন। বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে কৃষিজমি লিজ নিয়ে খামার স্থাপন করেছেন, যা বাংলাদেশ এবং লিজ প্রদানকারী উভয় দেশের খাদ্য চাহিদা মেটানো ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

শান্তিরক্ষী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের কঠোর নির্বাচন এবং যাচাইকরণ প্রক্রিয়া অনুসরণপূর্বক যোগ্য এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাইকৃত সেনাসদস্যদের মোতায়েন নিশ্চিত করে। সর্বদা এই প্রক্রিয়া অনুসরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শান্তিরক্ষী নির্বাচনে উচ্চমানের আচরণবিধি এবং পেশাগত দক্ষতার দায়বদ্ধতা প্রমাণ করেছে। নীল হেলমেট পরে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাংলাদেশের ১৩৪ সেনাসদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। ২০০৫ সালে কঙ্গোতেই ৯ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। কয়েকশ’ সদস্য পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বর্তমান সেনাপ্রধান বলেছেন, ‘আমি নিজে সেন্ট্রাল আফ্রিকায় একটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং মিশনের শুরু থেকে ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার ছিলাম। এটা এমন একটা মিশন যে মিশনের এসআরএসজি বা স্পেশাল রিপ্রেজেন্টেটিভ অব দ্য সেক্রেটারি জেনারেল, তার চাকরি চলে যায়। সেই মিশনে অনেক অনিয়ম হয়েছিল। সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ হয়েছিল। অনেক রকম কর্মকাণ্ডের জন্য সেই কন্টিনজেন্টকে চলে যেতে হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশি কন্টিনজেন্ট ছিল। আমাদের বিরুদ্ধে তো একটা অভিযোগও আসেনি! এটা একটা উদাহরণ।’ পৃথিবীতে অনেক অঞ্চলে, শুধু আফ্রিকায় নয়, আফ্রিকার বাইরে আমরা এশিয়া ও ইউরোপেও দায়িত্ব পালন করেছি জানিয়ে সেনাপ্রধান আরও বলেন, ‘কখনও কি আমাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পেয়েছেন? এজন্যই মিশনে বাংলাদেশি শান্তি সেনাদের চাহিদা।’

প্রশ্ন হলো, কেন সেনাবাহিনীকে ঘিরে এই ষড়যন্ত্র? দেশে-বিদেশে এমন গর্বের সেনাবাহিনীকে নিয়ে মিথ্যাচার করে ফিকশন থ্রিলার তৈরির নেপথ্যে যেসব কারণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো–

এক. দেশে-বিদেশে অবস্থানরত দেশবিরোধী একটি নব্য রাজাকার সিন্ডিকেট বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে অহর্নিশ অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হত্যা কিংবা বিদেশি লবি ব্যবহার করে ক্ষমতাচ্যুত করা, বিচার বিভাগ ও সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানানো, নির্বাচন বানচাল করে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টির পাঁয়তারা, গুজব রটিয়ে রাষ্ট্রে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি, বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক না কিনতে ইউরোপ-আমেরিকায় লবিং, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অজুহাত তুলে বাংলাদেশের ইমেজকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পরিকল্পিতভাবে দেশি-বিদেশি এনজিওদের ব্যবহার করা হচ্ছে।

দুই. জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে সবচেয়ে বেশি সেনাসদস্য প্রদায়ক রাষ্ট্র বাংলাদেশ। অন্যদের চক্ষুশূল বাংলাদেশকে টার্গেট করতে তথাকথিত ডকুমেন্টারির নামে এমন ফিকশন চিত্র তৈরি করা হয়ে থাকতে পারে।

তিন. দেশবিরোধী যে চক্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভয়ংকর ষড়যন্ত্র করছে ওই চক্র নানান হীন চেষ্টার পাশাপাশি রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে মিথ্যা তথ্যচিত্র তৈরি করছে। তাদের একটি সুসংগঠিত সিন্ডিকেট রয়েছে। এক গ্রুপ বাংলাদেশবিরোধী ফিকশন তৈরির কাজে নিয়োজিত, ডয়েচে ভেলে কিংবা আল জাজিরার মতো সংবাদমাধ্যম প্রচারের দায়িত্বে রয়েছে আর মুশফিকুল ফজল আনসারীরা তা জাতিসংঘ ও মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টসহ অন্যান্য রাষ্ট্র ও প্রতিষ্ঠানে এসব মিথ্যাচার পরিবেশনের দায়িত্বে রয়েছে।

বাংলাদেশের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মন বিষিয়ে তোলার লক্ষেই ষড়যন্ত্রকারীরা এই কাজ করছে। উদাহরণস্বরূপ, ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদন প্রকাশের পরদিন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক প্রেস সেক্রেটারি মুশফিকুল ফজল আনসারী নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিকের কাছে প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন। সেই নিয়মিত ব্রিফিংয়ের এজেন্ডায় বাংলাদেশ নিয়ে কোনও প্রসঙ্গ ছিল না। এমনকি সেখানে উপস্থিত অন্তত ১৫ জন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কেউই এ বিষয়ে কোনও আগ্রহ দেখায়নি। ফজল আনসারী অপ্রাসঙ্গিকভাবে বাংলাদেশের রাজনীতির নানান নেতিবাচক বিষয়ের অবতারণা করেন। তার এই অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে অবতারণা থামিয়ে প্রশ্ন সম্পর্কে জানতে চান স্টিফেন। তখন তিনি এই ফিকশনের উদ্ধৃতি দিয়ে জাতিসংঘ মিশনে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী বাংলাদেশি সেনাসদস্য পাঠানোর বিষয় উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা জানতে চান। জবাবে মুখপাত্র বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সেসব ব্যক্তিকে মোতায়েন করে, যারা সর্বোচ্চ দক্ষতা ও সততার নীতি বজায় রেখে কাজ করতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছে মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং তা রক্ষার অঙ্গীকার।

শান্তিরক্ষী মোতায়েনের আগে তাদের জাতিসংঘের নির্ধারণ করে দেওয়া মানবাধিকার রেকর্ড যাচাই-বাছাই করে দেখা হয়। স্টিফেন তার বক্তব্যে জাতিসংঘের দায়বদ্ধতার জায়গা তুলে ধরে বলেন, আমরা আবারও খুব সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখানো এবং তা রক্ষার অঙ্গীকারকে অন্তর্ভুক্ত করে দক্ষতা ও সততার সর্বোচ্চ যে মান নির্ধারণ করা হয়েছে, তা মেনে (জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে) কর্মী মোতায়েনের বিষয়ে জাতিসংঘ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংশ্লিষ্টতা যাচাই–বাছাইয়ের যে নীতি রয়েছে, তার ভিত্তিতে নিয়মনীতিও গড়ে তুলেছে জাতিসংঘ।

স্টিফেন ডুজারিক আরও বলেন, কয়েক বছর ধরে আমাদের জানানো হয়েছে, শান্তিরক্ষা মিশনে মোতায়েন করা হাতে গোনা কয়েকটি দেশের কর্মকর্তারা অতীতে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। এমন কোনও ঘটনা ঘটলে শান্তিরক্ষার কাজে নিয়োজিত আমাদের সহকর্মীরা যথাযথ পদক্ষেপ নেন। যাচাই-বাছাইয়ের নীতি এবং সেনা সরবরাহকারী দেশের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে অনেক ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের শান্তিরক্ষা মিশনে মোতায়েন না-ও করা হতে পারে, এমনকি তাদের প্রত্যাহার করতে পারে জাতিসংঘ।

স্টিফেনের এই বক্তব্যের ফলে বোঝা যায়, এত বছর অভিযোগ এলেও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বিষয়ে কোনও প্রমাণ পায়নি জাতিসংঘ। প্রমাণ ছাড়াই বারবার অভিযোগের তীর ছুড়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বহির্বিশ্বে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। জাতিসংঘে সুবিধা করতে না পেরে ফজল আনসারী মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফিংয়েও ওই ফিকশনের উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উসকানি দেওয়ার অপচেষ্টা করেন। সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে ফজল আনসারীর এমন অপকর্ম এবারই প্রথম নয়। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিভাগে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী বাংলাদেশি সেনা সদস্যদের ব্যবহার নিয়ে এর আগেও তিনি প্রশ্ন তোলেন।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।

ওই সময় তিনি বলেন, ‘এর আগেও তিনি বিষয়টি বারবার তুলেছেন কিন্তু জাতিসংঘ তাতে গুরুত্ব দেয়নি।’ তখন মুখপাত্র বলেন, ‘আমি আপনার প্রশ্ন বুঝতে পেরেছি। গতকালও একই বিষয়ে ‍আমি আপনাকে পুরোপুরি বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আপনি যে বিষয়ে কথা বলছেন আর যাদের কথা বলছেন তাদের সম্পর্কে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই। শান্তিরক্ষা বিভাগ একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে উর্দিধারী সেনাদের নিয়োগ করে।’

পাঁচ. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশে সহজে নাজায়েজ সুবিধা আদায় করতে পারে না, সেখানে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির জন্য নানান উপায়ে জনমত প্রভাবিত করতে বা উসকানি সৃষ্টির চেষ্টা করে। এ কাজে নিয়োজিত সিআইএ’র সহযোগী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল এনডোমেন্ট ফর ডেমোক্র্যাসি (এনইডি) নামের একটি মার্কিন সংস্থা। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে বিভিন্ন ইস্যুতে জনগণকে ক্ষেপিয়ে তোলে এনইডি। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়ও ওই দেশ ও সরকার সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করে। বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির দেশকে ধ্বংস করতে এবং দেশগুলো যেন মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে না পারে, সেজন্য এনইডি সরকারবিরোধী বিভিন্ন প্রতিপক্ষ তৈরিতে অর্থায়ন এবং নানাভাবে সহায়তা করে থাকে। এনইডি’র হয়ে কাজ করে বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যম, সুধীসমাজ। এরা সরকারবিরোধী অপপ্রচার, গুজব, প্রপাগান্ডা চালিয়ে যায় অবিরত। এভাবে জনমতকে সরকারের বিরুদ্ধে এমনভাবে উসকে দেয়, যেন অসাংবিধানিকভাবে সরকারকে উৎখাত করা হলেও জনগণ সেটি সহজেই গ্রহণ করে। পরিকল্পিত নীলনকশার মাধ্যমে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে (ডিডব্লিউ) কাজে লাগিয়ে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে বাদ দিতে তথ্যচিত্র বানিয়ে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ছক এঁকেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মদতপুষ্ট প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) এবং নেত্র নিউজ। একই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে র‌্যাবের হাতে একরাম হত্যার ৫ বছর পর ডয়েচে ভেলের র‌্যাবকে ডেথ স্কোয়াড বানানোর প্রয়োজন পড়েছে।

সাম্প্রতিককালে র‌্যাবের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য কোনও অভিযোগ খুঁজে না পেয়ে পুরনো ঘটনাকে নতুন করে সামনে আনতে হয়েছে, বিতর্ক উসকে দেওয়ার জন্যই।

সাত. দেশি-বিদেশি একটি মহল চেয়েছিল জাতীয় নির্বাচন বানচাল করে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে তাদের পছন্দমাফিক একজন পুতুল সরকার বসাতে। শেখ হাসিনার দৃঢ়তা ও কৌশলের কাছে তাদের পরিকল্পনা পরাজিত হয়েছে। সবশেষ আশা ছিল সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করবে। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নিজ হাতে ক্ষমতা নেবে কিংবা ওয়ান ইলেভেন স্টাইলে সরকার গঠন করবে। এ লক্ষ্যে তারা নানাভাবে সেনাবাহিনীকে উসকানি দিয়েছে। ইউটিউবে এ বিষয়ে উসকানিমূলক অনেক ভিডিও রয়েছে। কিন্তু তাদের আশা সফল হয়নি। সেনাবাহিনীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাই ফিকশন থ্রিলার তৈরি করে ডয়েচে ভেলেকে দিয়ে প্রচার করিয়েছে।

সেনাবাহিনীর প্রতি যদি ষড়যন্ত্রকারীদের ন্যূনতম ভালোবাসা থাকতো, দেশের প্রতি এতটুকু দরদ থাকতো, তাহলে সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিতর্কিত ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে অপমানিত করার আগে তারা যেসব মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী সেনা সদস্যকে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে পাঠানো হয়েছে তাদের নাম ও অপরাধের বিবরণ উল্লেখ করে সেনাবাহিনী প্রধানকে জানাতে পারতেন, প্রতিকার চাইতে পারতেন। সেনাপ্রধান কোনও ব্যবস্থা না নিলে তারা তথ্যচিত্র নয়, যেকোনও পন্থা অবলম্বন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নালিশ করতে পারতেন। কিন্তু তারা তা করেননি। কারণ সেনাবাহিনীকে তারা শত্রু জ্ঞান করেন।

সার্বভৌমত্বের প্রতীক আমাদের দেশপ্রেমিক গর্বিত সেনাবাহিনীর সঙ্গে শত্রুতা সন্দেহাতীতভাবেই রাষ্ট্রদ্রোহিতা।

লেখক: অধ্যাপক, আইন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
ই-মেইল: zhossain1965@gmail.com