উখিয়ায় আরসার গুলিতে আহত র্যাব সদস্য, আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক পাঁচ

নিউজ ডেস্ক
কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্পে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যদের সঙ্গে র্যাবের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে এক র্যাব সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে রামু সিএমএইচে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরে অভিযানে স্থানীয় এক সহযোগীসহ আরসার চার সদস্যকে আটক করে র্যাব। আর ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বেশ কিছু গুলি।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে এই ঘটনা ঘটে।
আটক আরসা সদস্যরা হলেন মো. নেছার (৩০), রবি আলম (১৮), মো. আবুল কালাম (২৮) ও মো. আইয়ুব (২২)। এই ৪ জনই উখিয়ার ক্যাম্প-১৫ এর বিভিন্ন ব্লকের বাসিন্দা। আটক স্থানীয় নাগরিক হলেন আবুল হোসেন (২০)।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রামুস্থ র্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, উখিয়ার ১৫ নম্বর ক্যাম্পটি চারদিকে পাহাড়ে ঘেরা। এই পাহাড়গুলো দিয়ে সহজে যাওয়া যায় টেকনাফের পাহাড়গুলোতেও। এই পাহাড়গুলোতে স্থানীয় কৃষকরা গরু চড়াতে বা বনে কাঠ সংগ্রহ করতে গেলেই উৎপেতে থাকে আরসা সন্ত্রাসীরা। তারপর অস্ত্রের মুখে স্থানীয়দের অপহরণ করে গহীন পাহাড়ে নিয়ে চালায় অমানবিক নির্যাতন। যা ভিডিও ধারণ করে পরিবারের কাছে পাঠানোর মাধ্যমে আদায় করা হয় মুক্তিপণ। এই মুক্তিপণের অর্থ দিয়ে যোগান দেয়া হয় অস্ত্রের।
সাজ্জাদ হোসেন আরও বলেন, ইউনুস মাঝি, মৌলভী ইব্রাহিম ও আরাফাতের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জনের আরসার একটি গ্রুপ ক্যাম্প-১৫ এর পাহাড়ি আস্তানায় অবস্থান করছে বলে সংবাদ পায় র্যাব। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে মোছারখোলা নামক স্থানে র্যাবের কয়েকটি দল পৌঁছাতেই এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়ে সন্ত্রাসীরা। র্যাবও পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। ঘণ্টাব্যাপি গোলাগুলিতে গুলিবিদ্ধ হয় র্যাবের এক সদস্য, তাকে রামু সিএমএইচে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
পরে পাহাড়ি আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয় ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বেশকিছু গুলি। একই সঙ্গে আস্তানা থেকে অনেকে পালালেও আটক করা হয় পাঁচ জনকে।
র্যাব অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন আরও বলেন, আটক পাঁচ জনের মধ্যে আবুল হোসেন স্থানীয় বাঙালি। তিনি মূলত আরসা সন্ত্রাসীদের অপহরণের তথ্যদাতা। কোন কৃষকের আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে, কাকে অপহরণ করলে মুক্তিপণ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই তথ্য আরসা সন্ত্রাসীদের কাছে প্রদান করতেন। যা প্রাথমিকভাবে স্বীকারও করেছে।
গেল দেড় বছরে আরসার ১১৮ জন সদস্যকে গ্রেফতারের পাশাপাশি ৭১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয় বলেও জানান তিনি।