স্বেচ্ছাচারিতা ও আত্মীয়করণের দায়ে সুপ্রদীপ চাকমার পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করল মারমা এবং ত্রিপুরা সমাজ
নিউজ ডেস্ক
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার পদত্যাগের দাবিতে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচেতন মারমা এবং ত্রিপুরা সমাজের ব্যানারে শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল শেষে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বিক্ষুব্ধরা।
এর আগে জেলা শহরের বৌদ্ধ বিহারের সামনে থেকে মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামানের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করা হয়েছে।
এসময় বক্তারা অভিযোগ করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা উগ্র সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী। তিনি ক্ষমতায় থাকলে পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হবে। বঞ্চিত হবে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষ। পার্বত্য চট্টগ্রামের সম্প্রীতি বজায় রাখতে দ্রুত সুপ্রদীপ চাকমার পদত্যাগ দাবি করেন বক্তারা।
এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো মারমা এবং ত্রিপুরা সমাজের প্রতিনিধি কংজপ্রু মারমা ও প্রশান্ত ত্রিপুরা স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ‘পার্বত্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার উগ্র সাম্প্রদায়িক। তিনি স্বেচ্ছাচারিতা সহ নির্লজ্জ আত্মীয়করণের মাধ্যমে পাহাড়ে এক ধরনের পরিবারতন্ত্র গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। তার আত্মীয়করণের কারনে আমরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারমান সহ সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছি।’ সুপ্রদীপ চাকমাকে স্বীয় পদ হতে আশু অপসারণ করার জন্য পিছিয়ে রাখা সম্প্রদায় সমূহ স্মারকলিপিতে সু-নির্দিষ্ট দাবীসমূহ উত্থাপনও কছেছে। দাবী সমূহ হলোঃ
১। অন্তবর্তীকালীন সরকার এর পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী পদমর্যাদায় সুপ্রদীপ চাকমাকে আশু অপসারণ করে অসাম্প্রদায়িক ও সকল সম্প্রদায়ের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে তাঁর পদে নিয়োগ প্রদান করা।
২। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে পার্বত্য চট্টগ্রামে পিছিয়ে রাখা মারমা/ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদান করা।
৩। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় বসবাসরত সর্বক্ষেত্রে পিছিয়ে রাখা জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিয়ে সকল প্রকার সুযোগ সুবিধাসহ সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৪০ বছর পূনঃনির্ধারণ করা।
উত্থাপিত সু-নির্দিষ্ট ইতিবাচক দাবীসমূহ বাস্তবায়ন করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার নিকট জোর প্রার্থনা জানিয়ে মারমা ও ত্রিপুরা সমাজ জানায়, দাবীসমূহ বাস্তবায়িত করা না হলে বৃহত্তর খাগড়াছড়ি জেলার পিছিয়ে রাখা সম্প্রদায়ের জনাগোষ্ঠী কঠোর আন্দোলন ডাক দিতে বাধ্য হবে।
উল্লেখ্য, অন্তর্বতীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহনের পর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব নিয়ে সম্প্রতি সুপ্রদীপ চাকমা তিন জেলায় বেশ কয়েকটি সভায় অংশ নিয়ে স্পর্শকাতর কয়েকটি মন্তব্য করে পাহাড়ে বাঙ্গালি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের মাঝে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।