খাগড়াছড়িতে নিজ ভূমি থেকে বাঙালি পরিবারকে উচ্ছেদের চেষ্টা ইউপিডিএফের

খাগড়াছড়িতে নিজ ভূমি থেকে বাঙালি পরিবারকে উচ্ছেদের চেষ্টা ইউপিডিএফের

খাগড়াছড়িতে নিজ ভূমি থেকে বাঙালি পরিবারকে উচ্ছেদের চেষ্টা ইউপিডিএফের
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি সশস্ত্র আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনের ইন্ধনে সরকারী খাস ও বাঙালি সম্প্রদায়ের জমি দখল করে ঘর-বাড়ি এমনকি ধর্মীয় উপাসনালয় নির্মানের ঘটনাগুলো অহরহ ঘটলেও এবার খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড়ে বাঙালি ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে বাঙালি পরিবারকে উচ্ছেদের নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা।

রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়নের লালছড়ি, পূর্ব লালছড়ি, গরুকাটা, হাসুকপাড়া এলাকায় একের পর এক বাঙালিদের জমি দখলের অংশ হিসেবে এবার ওই এলাকার জনৈক কালাম সওদাগর নামে এক কৃষককে বাড়ীঘর থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা চালায় সন্ত্রাসীরা।

সূত্র বলছে, প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন পাহাড়ের আঞ্চলিক উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফের নেতা-কর্মীরা ধর্মীয় উপসনালয়ের নামে মূলত উক্ত জমিটি দখলের পাঁয়তারা করছে। আর এতে তাদের সহায়তা করছেন স্থানীয় উপজাতি নেতারা।

জানা যায়, ঐ এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা বাঙালিদের জায়গা জমি দখল করে উপজাতি বসতি স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কৃষক আবুল কালামকে তার পাঁচ একর জায়গায় বাগানবাড়ি থেকে উচ্ছেদের জন্য মোটা অংকের চাঁদা চেয়েছিল সন্ত্রাসীরা। চাঁদা না পেয়ে স্থানীয় উপজাতিদের দিয়ে কালামের বাগানবাড়ি থেকে গরু-ছাগল চুরি, ফলন্ত গাছগাছালি কেটে ফেলা হয়েছিল। এতকিছু করার পরও কালাম নিজ জায়গা ছেড়ে যায়নি। সর্বশেষ গত ১০ ফেব্রুয়ারী তার বাগান থেকে পানির পাম্প মেশিনটিও নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

কালাম জানায়, পাম্পটি নিয়ে যাওয়ার পর তিনি বিষয়টি নিকটস্থ খাগড়াবিল বিজিবি ক্যাম্পকে অবহিত করেন। বিজিবিকে জানানোর কারনে সন্ত্রাসীরা তাকেসহ অন্যদের ফাঁসানোর জন্য পাশ্ববর্তী একটি উপজাতির ঘরে আগুন লাগানোর মিথ্যা নাটক সাজিয়ে বিজিবিকে অভিযোগ দেন। আজ শুক্রবার সকালে বিজিবি ও এলাকাবাসী সরেজমিনে গিয়ে এর কোন সত্যতা পাননি। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) রাতে তার বাড়ী ভাংচুর করে উপজাতি সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে তিনিসহ ঐ এলাকার লোকজন চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছেন।

ইউপি সদস্য ইসমাঈল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কয়েকদিন পরপর এসব এলাকার বাঙ্গালীদের মালিকানাধীন আবাদী ও অনাবাদী ভূমি বহিরাগত উপজাতী জনগোষ্ঠি দিয়ে জোরপূর্বক দখলের খবর আসে । যাদের কখনো এসব অঞ্চলে বসবাস করতে দেখা যায়নি। ভূক্তভোগীদের আইনী সহায়তা নিতে বলা হয়েছে।

জমি দখল করে ধর্মীয় উপাসনালয় নির্মানের বিষয়টি নিশ্চিত করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি জানিয়েছে, বহুদিন ধরেই ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা গরুকাটা, বেলছড়ি, মরাকয়লা, গুজাপাড়া, সাতক্ষীরাপাড়া সহ বিভিন্ন পাহাড়ি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বাঙালিদের জমি দখল করে সেখানে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করেছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় কিছু উপজাতি নেতার ও তৎকালীন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা উপজাতি নেতাদের যোগসাজেশে ইউপিডিএফ সাজেক, রাঙামাটি ও বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকা হতে উপজাতি সম্প্রদায়ের বহু লোকজনকে নিয়ে এসে ২ নং পাহাছড়া ইউনিয়নের গরুকাটা, বেলছড়ি, মরাকয়লা, গুজাপাড়া, সাতক্ষীরাপাড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় বাঙালিদের জমি দখল করে হাসুক পাড়া, নতুন পাড়াসহ কয়েকটি কৃত্রিম গ্রাম তৈরী করেছেন, ২০১৭ সালের আগে যেসব গ্রামের কোন অস্তিত্বই ছিলো না। এমনকি তারা কৌশলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ হতে বহিরাগত এসব উপজাতি সম্প্রদায়ের জন্য নাগরিক সনদ এবং প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহেরও চেষ্টা করেছিলেন একাধিকবার। ১ নং রামগড় ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের তৈছাগাড়ায় বাঙালিদের একাধিক কবুলিয়তকৃত ভুমি দখলের অভিযোগ রয়েছে উপজাতিদের বিরুদ্ধে।

উল্লেখ্য, অবৈধভাবে বাঙালিদের ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি দখল করে ধর্মীয় উপসনালয় নির্মান ও বসবাড়ি তৈরী করে এক শ্রেণীর দূষ্কৃতিকারীরা পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের পাঁয়তারা করছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

You may have missed