‘ওদের আদিবাসী দাবির পেছনে জড়িয়ে আছে ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত’
![]()
বাংলাদেশের কিছু গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের ‘আদিবাসী’ বলে পরিচয় দিয়ে বিশেষ সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছে। কিন্তু এই দাবির পেছনে যে একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে, তা খোলাসা করার সময় এসেছে। রাষ্ট্রবিরোধী কিছু মহল, বিদেশি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এবং তথাকথিত মানবাধিকার সংগঠন একসঙ্গে মিলে এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য একটাই—বাংলাদেশকে বিভক্ত করা, জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরানো এবং দেশের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।
প্রথমত, সংবিধানের আলোকে বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী গোষ্ঠী নেই। যারা নিজেদের আদিবাসী দাবি করছে, তারা মূলত নৃগোষ্ঠী বা ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অন্তর্ভুক্ত। এক শ্রেণির এনজিও, পশ্চিমা শক্তি এবং উগ্রপন্থী গোষ্ঠী এই ‘আদিবাসী’ তকমাকে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চায়। এটি একধরনের কৌশল, যা দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে বহুল ব্যবহৃত—একটি জাতিকে দুর্বল করে তাদের ওপর প্রভাব বিস্তারের ষড়যন্ত্র।
দ্বিতীয়ত, এই গোষ্ঠীগুলো কৌশলে দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাস, বিশৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। পাহাড়ি অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রমের মূল চালিকা শক্তি এরা। অস্ত্র সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিদেশি সাহায্য গ্রহণ পর্যন্ত, এদের কার্যকলাপ রাষ্ট্রের জন্য ভয়ংকর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ তথাকথিত মানবাধিকার সংগঠনগুলো এসবের প্রতিবাদ না করে বরং উল্টো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।
তৃতীয়ত, ‘আদিবাসী’ পরিচয় জোর করে প্রতিষ্ঠার পেছনে সুস্পষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। আদিবাসী স্বীকৃতি পেলে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে এদের জন্য স্বায়ত্তশাসন কিংবা বিশেষ অধিকারের দাবি তোলা সহজ হয়ে যাবে। এর ফলে, একদিন তারা স্বাধীনতার দাবি তুলবে এবং দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা বিপন্ন হবে। এই কৌশল একেবারেই নতুন নয়; কসোভো, দক্ষিণ সুদান এবং তিব্বতের ক্ষেত্রেও আমরা একই ষড়যন্ত্র প্রত্যক্ষ করেছি।
চতুর্থত, বাম সংগঠন ও কিছু আন্তর্জাতিক মিডিয়া পরিকল্পিতভাবে ‘আদিবাসী’ শব্দটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয় ও সংস্কৃতি সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা। ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে তারা সাধারণ মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে এবং রাষ্ট্রবিরোধী প্রোপাগান্ডার অংশ হিসেবে ‘আদিবাসী’ পরিচিতিকে শক্তিশালী করতে চাইছে। এর পেছনে বৈদেশিক শক্তির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ রয়েছে, যা একসময় আরও বড় সংকট তৈরি করতে পারে।
বাংলাদেশের জনগণকে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। জাতি হিসেবে আমাদের ঐক্য অটুট রাখতে হবে এবং দেশের অভ্যন্তরে যেকোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী চক্রান্ত কঠোর হাতে দমন করতে হবে। সরকারের উচিত এ বিষয়ে কঠোর আইন প্রয়োগ করা এবং যেকোনো বিদেশি চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না—এই ষড়যন্ত্র শুধু একটি গোষ্ঠীর নয়, এটি আমাদের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে এক গভীর চক্রান্ত, যা কখনোই সফল হতে দেওয়া যায় না।
মোঃ সাইফুল ইসলাম।
সাউথইস্ট এশিয়া জার্নাল।