আতঙ্কের ঘেরাটোপে বন্দি পাহাড়, সেনা ক্যাম্প কমানোয় বেড়েছে সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা

আতঙ্কের ঘেরাটোপে বন্দি পাহাড়, সেনা ক্যাম্প কমানোয় বেড়েছে সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা

আতঙ্কের ঘেরাটোপে বন্দি পাহাড়, সেনা ক্যাম্প কমানোয় বেড়েছে সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

শান্তি প্রতিষ্ঠায় চুক্তি সই হলেও সেই শান্তি আজও চোখে দেখেনি পাহাড়ের মানুষ। চুক্তির শর্ত হিসেবে সেনা ক্যাম্প সরানো হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কমেনি অপরাধ। উল্টো দিনকে দিন বেড়েছে। পুলিশের কার্যক্রমও খুব একটা বাড়েনি তিন জেলায়। ফলে শঙ্কা নিয়ে দিন কাটান স্থানীয়রা। শর্ত হিসেবে পাহাড় থেকে একের পর এক সেনা ক্যাম্প গুটিয়ে নেয় সরকার। ধীরে ধীরে গুটিয়ে নেয়া হয় ৯৫টি সেনা ক্যাম্পসহ বিভিন্ন বাহিনীর ২৪১টি ক্যাম্প।

একের পর এক ক্যাম্প সরানো হলেও অবৈধ অস্ত্র মুক্ত হয়নি পাহাড়, বন্ধ হয়নি খুনোখুনিও। জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফসহ চারটি সংগঠনের সদস্যদের হাতে রয়ে গেছে অসংখ্য অস্ত্র। যে অস্ত্রের ভান্ডারতো কমছেই না উল্টো দিন দিন সমৃদ্ধ হচ্ছে। প্রত্যাহার হওয়া সেনা ক্যাম্পগুলোর জায়গায় পুলিশি কার্যক্রম জোরদার করার পরিকল্পনা থাকলেও; বাস্তবায়ন হয়নি সেটিও। ফলে আতঙ্ক নিয়েই থাকতে হয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয়রা জানান, আমাদেরকে এখানে বাঁচাতে হলে অবশ্যই সেনা ক্যাম্পের দরকার আছে, সন্ত্রাসীরা কাউকে ভয় করছে না, তারা সরাসরি অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করে । সেনাবাহীনির ক্যাম্পগুলো সরিয়ে ফেলায় সন্ত্রাসীদের তৎপরতা আরও বেড়ে গেছে। অস্থায়ী হোক আর স্থায়ী হোক অন্তত ছোট পরিসরে হলেও সেনা ক্যাম্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাহলে আমরা স্বস্থির নিশ্বাস ফেলতে পারবো। আর তা না হলে সন্ত্রাসীদের দমানোর কেউ নাই।

বর্তমানে তিন পার্বত্য জেলায় সেনা ক্যাম্প রয়েছে ১১৩টি। যা দিয়ে শান্তি বজায় রাখতে নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করছেন বলে জানান সেনা সদস্যরা। অভিযোগ মিলেছে, নিজেদের চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধ ঢাকতে নিরীহ পাহাড়িদের কাছে সেনাবাহিনীকে নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায় সশস্ত্র সংগঠনগুলো।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

বান্দরবান জেলার পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, কিছু জায়গায় আমাদের কাজ করতে অনেক অসুবিধা হয়। বিশেষ করে পাহাড় অধ্যুষিত রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি, লামা, নাইক্ষ্যংছড়িসহ রিমোট এলাকাগুলো যেখানে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ ক্যাম্প নেই।

এমন সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে পাহাড়ে নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে সরকারের নতুন করে ভাবা উচিত বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ বলেন, সেনাক্যাম্প তুলে দিলেন কেন? সেনাক্যাম্প থাকা তো জাতীয় নিরাপত্তার অংশ। এ ব্যাপারে কোনো রাজনৈতিক দলের কিছু বলার থাকার কথা নয়। কথা বললে এটা দেশদ্রোহিতার সামিল হবে। আমার সীমান্তের ওইপাশে যদি বিদ্রোহ চলে তাহলে দেশের নিরাপত্তা দিবে কে। এখন যেহেতু ইন্ডিয়ার সেভেন সিস্টারে সংঘাত চলছে, মিয়ানমারে সংঘাত চলছে ফলে বাংলাদেশের নিরাপত্তানীতি কী হবে এটা আমাদের নীতিনির্ধারকরা নির্ধারণ করবেন।

বর্তমানে সেনা সদস্যদের পাশাপাশি ৩৭টি বিজিবি, ১৪টি এপিবিএন, ১০টি আনসার এবং ৩২টি পুলিশ ক্যাম্প শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে পাহাড়ে ।

সূত্র: চ্যানেল ২৪ অনলাইন।