ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাঙামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ ও মহাসমাবেশ
![]()
স্বায়ত্তশাসনের নামে বিচ্ছিন্নতাবাদী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন
নিউজ ডেস্ক
পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গঠনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন এবং সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে রাঙামাটিতে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১২ মে) সকাল ১১টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ শেষে বনরূপা এলাকায় মহাসমাবেশে মিলিত হয়। এতে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী, যুবক ও সাধারণ জনগণ অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পিসিসিপির রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সহ-সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি) এর কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি’র রাঙামাটি সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, পিসিসিপি জেলা সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, প্রচার সম্পাদক ইসমাঈল গাজী এবং লংগদু উপজেলা সভাপতি মো. সুমন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে ইউপিডিএফ-এর সাম্প্রতিক বৈঠক বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রতি চরম অবমাননা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি। স্বায়ত্তশাসনের নামে তিন পার্বত্য জেলা নিয়ে আলাদা অঞ্চল গঠনের প্রস্তাব জাতিকে বিচ্ছিন্নতাবাদী ষড়যন্ত্রের মুখে ফেলেছে।”
তারা বলেন, ইউপিডিএফ একটি কুখ্যাত সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, যারা দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, অস্ত্রধারণ ও সাম্প্রদায়িক উসকানিসহ নানা অপরাধে লিপ্ত। সংগঠনটির নেতা মাইকেল চাকমা, যার বিরুদ্ধে একাধিক অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে, তাকেই আজ রাজনৈতিক বৈধতা দেওয়ার অপচেষ্টা হচ্ছে। বক্তারা প্রশ্ন তোলেন, “একজন আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসী গণতন্ত্রের প্রচারক হতে পারে কীভাবে?”
সমাবেশ থেকে বক্তারা জানান, ইউপিডিএফ ও তাদের মতো সংগঠনকে রাজনৈতিক বৈধতা দেওয়া মানেই দেশের অখণ্ডতার বিপর্যয় ডেকে আনা। তারা বলেন, “এই ষড়যন্ত্র রুখে না দাঁড়ালে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-সম্প্রীতির পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই সময় এসেছে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার।”

সমাবেশ থেকে পিসিসিপি পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করে—
১. ইউপিডিএফ, জেএসএস, কেএনএফসহ পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন ও তাদের সহযোগী সংগঠনসমূহের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
২. দেশদ্রোহী মাইকেল চাকমা, সন্ত লারমা, প্রসীত খীসা, প্রকৃত রঞ্জন চাকমা, দেবাশীষ রায়, ইয়েন ইয়েনসহ পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের গডফাদারদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
৩. জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী দোসরদের অপসারণ, বিশেষ করে ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীকে অপসারণ করতে হবে।
৪. সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান বন্ধে নতুন করে বিজিবি ক্যাম্প (বিওপি) স্থাপন করতে হবে।
৫. পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রীতি রক্ষায় ১৯০০ সালের শাসনবিধি বাতিল করে সকল নাগরিকের জন্য বৈষম্যহীন পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়ার উদ্যোগ নিতে হবে।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি অবিলম্বে ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করা না হয়, তাহলে শান্তিকামী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম অচল করে দেওয়া হবে।”
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।