পাহাড়ে নিয়োগে বৈষম্যের এই ধারাটা কি চলতেই থাকবে?

পাহাড়ে নিয়োগে বৈষম্যের এই ধারাটা কি চলতেই থাকবে?

পাহাড়ে নিয়োগে বৈষম্যের এই ধারাটা কি চলতেই থাকবে?
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

মো. সাইফুল ইসলাম

সম্প্রতি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের আওতাধীন বাজার ফান্ড প্রশাসকের কার্যালয়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে একটি চিত্র আবারও চোখে পড়েছে—”পরিষদের আইন মোতাবেক উপজাতীয় প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।”

প্রশ্ন জাগে, কেন এমন হবে? নিয়োগ তো হওয়ার কথা যোগ্যতার ভিত্তিতে। যে ব্যক্তি মেধা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থাকবে, সে-ই পাবে চাকরি—এই তো স্বাভাবিক নিয়ম। অথচ এখানে প্রার্থীর জাতিগত পরিচয়কে মূল বিবেচনার জায়গায় বসানো হচ্ছে।

আমরা বহুবার দেখেছি, পার্বত্য তিন জেলার জেলা পরিষদ ও স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বাঙালি প্রার্থীদের প্রাথমিক ধাপেই বাদ দিয়ে নিয়োগে ‘জাতিগোষ্ঠী অগ্রাধিকার’ নীতি বাস্তবায়ন করছে। অথচ এই নিয়োগ তো বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য। পার্বত্য এলাকা বাংলাদেশেরই অংশ। তাহলে রাষ্ট্রীয় চাকরিতে বাঙ্গালি হওয়াটাই কী এখন অপরাধ?

আইনের কথা বলা হচ্ছে—কিন্তু জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯-এর কোথাও কি স্পষ্টভাবে বলা আছে, কোনো নিয়োগে অবশ্যই উপজাতীয় প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা রয়েছে? বরং সেখানে পরিষদের গঠনে প্রতিনিধিত্ব নিয়ে কথা বলা হয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বৈষম্য নয়।

পাহাড়ে নিয়োগে বৈষম্যের এই ধারাটা কি চলতেই থাকবে?

আরেকটি প্রশ্ন—পরিষদের যে সব বাঙ্গালি সদস্য আছেন, তাঁরা কী করেন? কেন এই বৈষম্য চোখে পড়ে না তাঁদের? স্থানীয় বাঙ্গালি জনগোষ্ঠীর অধিকার যখন এমনভাবে খর্ব হয়, তখন তাঁদেরও তো প্রতিবাদ জানানোর কথা। এই নীরবতা কি দায় এড়ানোর কৌশল?

পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তিচুক্তি ও নানাবিধ প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার ছত্রছায়ায় স্থানীয় বাঙ্গালি জনগোষ্ঠীকে এক ধরনের বৈধ প্রক্রিয়ায় ‘অবৈধ’ করে তোলা হচ্ছে। এই প্রবণতা গভীরভাবে উদ্বেগজনক এবং সাংবিধানিক সাম্যের পরিপন্থী।

এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি শুধু একটি চাকরির বিজ্ঞাপন নয়—এটি একটি বড় প্রশ্ন তোলে: রাষ্ট্র কি নিজেই নিজের নাগরিকদের মাঝে বিভাজন তৈরি করছে?

এটা থামাতে হবে। সময় এসেছে, স্থানীয় জনগণ—বিশেষত বাঙ্গালিরা—সংবিধান ও সমঅধিকারকে সামনে রেখে এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোক।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।