জিরুনার বিরুদ্ধে প্রকল্পের বরাদ্দের ১০ শতাংশ ঘুষ দাবির অভিযোগ, দুদকে লিখিত আবেদন
![]()
নিউজ ডেস্ক
প্রকল্পের অর্থ ছাড়ের বিপরীতে ১০ শতাংশ ‘পার্সোনাল কমিশন’ (পিসি) তথা ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরার বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।
মাস্টারদা সূর্য সেন গণপাঠাগারের সাধারণ সদস্য ও সাবেক সহ-সভাপতি মো. আরাফাত হোসেন রিজভী অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, গণপাঠাগারের ১৫৫ নম্বর প্রকল্পের আওতায় গ্রুপ ভিত্তিক বই পড়া কর্মসূচির জন্য ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই প্রকল্পের প্রস্তাবনায় অংশ নিতে গেলে জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রতিপদ দেওয়ান সরাসরি ঘুষ দাবি করেন। পরে জানা যায়, চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ১০ শতাংশ, নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাহফুজ ও প্রতিপদ দেওয়ান ৫ শতাংশ করে এবং মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরের আশীষ চাকমা ২ শতাংশ ঘুষ দাবি করেন।
ঘুষ না দেওয়ায় একাধিকবার হয়রানির শিকার হতে হয় বলেও অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়েছে। একপর্যায়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বরাদ্দ থেকে ১৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা ছাড়ের আবেদন করলে চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা ব্যক্তিগতভাবে এক লাখ টাকা গ্রহণের পর চেক প্রদান করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শেফালিকা ত্রিপুরা স্বীকার করেন, “চেয়ারম্যান ম্যাডাম এক লাখ টাকা নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মন্ত্রণালয় থেকেও টাকা আনতে টাকা লাগে।”
অন্যদিকে নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাহফুজ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “যদি অভিযোগ প্রমাণ হয়, আমি যে শাস্তি পাবো মাথা পেতে নেব।”
জিরুনা ত্রিপুরা অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এসব ভিত্তিহীন ও মিথ্যা অভিযোগ। প্রকল্পটিও যথাযথ নয়, তদন্ত করতে হবে।”
এদিকে আজই (সোমবার) পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিষদ-১ শাখা থেকে সিনিয়র সহকারী সচিব তাসলীমা বেগম স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরাকে পরিষদের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি আর কোনো প্রশাসনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা ঘুষ বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগ যখন দিন দিন বাড়ছে, তখন সরকারি এই আদেশকে অনেকেই একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করতে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন সচেতন নাগরিকরা।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।