রাঙামাটিতে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রন নিয়ে কোন্দলে বহিস্কৃত যুবলীগ নেতার পায়ের রগ কর্তন

নিউজ ডেস্ক
পার্বত্য জেলা রাঙামাটির বনরুপা ফরেষ্ট রোড সংলগ্ন ফুটপাতের দোকান ঘর থেকে চাঁদা আদায় ও চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রনকে কেন্দ্র করে এক বহিস্কৃত যুবলীগ নেতার পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি, উক্ত দোকানগুলো থেকে উত্তোলিত চাঁদার টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে রাঙামাটি পৌর ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাসির হোসেনকে দল থেকে বহিস্কার করে দলটির জেলা পর্যায়ের নেতারা। এরপর গত ২৭ জানুয়ারি সোমবার রাতেই তাকে কুপিয়ে জখম ও পায়ের রগ কেটে দেয় একদল দুর্বৃত্ত। ঘটনার পরপরই অজ্ঞান অবস্থায় গুরুতর নাসিরকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে স্থানীয়রা।
গুরুতর আহত নাসির জ্ঞান ফেরার পর জানিয়েছেন, “সোমবার রাত আনুমানিক আটটার দিকে শহরের হ্যাপির মোড় থেকে নিউ কোর্ট বিল্ডিং এর দিকে যাওয়ার সময় যুবলীগ নেতা ও ৭ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আরিফ তাকে পুরনো বিবাদ ভুলে সমঝোতার প্রস্তাব দেয় এবং শহরের প্রত্যাশা ক্লাবের দিকে ডেকে নেয়। সেখানে যাওয়া মাত্রই আগে থেকেই ওৎপেতে থাকা জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সুজনসহ কয়েকজন তাকে কিরিচ চাপাতি দিয়ে কোপানো শুরু করে। একপর্যায়ে সে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে এবং অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে কে বা কারা আমাকে হাসপাতালে রেখে গেছে আমি জানিনা।” নাসির আরো অভিযোগ করেছেন, জ্ঞান হারানোর আগে সে হামলাকারিদের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন, জেলা যুবলীগের সহসম্পাদক মিজান, যুবলীগ ৭ নং ওয়ার্ড কমিটির সেক্রেটারি আরিফকে চিনতে পেরেছেন। এসময় আরো অন্তত ১০/১৫ জন ছিলো বলে জানিয়েছেন তিনি।’ তবে এ ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন।
রাঙামাটি সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক দীপংকর তংচঙ্গ্যা জানিয়েছেন, “নাসিরের মাথায় ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন আছে। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে।” এছাড়া রাঙামাটি কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ মীর জাহিদুল হক রনি জানিয়েছেন, “নাসিরের পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়েছে এবং মাথায়ও ধারালো কিছু দিয়ে কোপানোর চিহ্ন আছে। আমরা প্রাথমিকভাবে জেনেছি, দলীয় কোন্দলের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।”
বিস্তারিত অনুসন্ধানে জানা যায়, বনরুপা বাজারে ফরেস্ট অফিসের সামনে ফুটপাত দখল করে ৩৮টি ভাসমান দোকান নির্মাণ করে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের কিছু নেতাকর্মী। সেখান থেকে প্রতিদিন চাঁদা উত্তোলন করা হয় দোকান প্রতি ৭০ টাকা। যার পুরোটা উত্তোলনের দায়িত্ব ছিলো ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারন সম্পাদক নাসিরের উপর। সম্প্রতি টাকা হিসাব নিয়ে বাকবিতন্ডতার পর নাসিরকে দল থেকে বহিস্কার করে সংগঠনটির নেতারা। সেসময় নাসির সাংবাদিক সম্মেলনসহ সামাজিক মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানান এর জেরেই সোমবার রাতে তাকে ডেকে লোহার রড ও কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে হামলা করে প্রতিপক্ষ। অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, মূলত ফুটপাতে অবৈধ এসব দোকন ঘর তৈরী ও চাঁদাবাজিতে রাঙ্গামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরীর অনুসারীরাই জড়িত।