মুজিববর্ষে হালদা নদীকে ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত সরকারের

নিউজ ডেস্ক
বাঙ্গালী জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন উপলক্ষে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড়ের পাহাড় থেকে উৎপত্তি হওয়া দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীকে ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণার সিদ্ধান্তের অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
দীর্ঘদিন যাবৎ স্থানীয়দের পক্ষ হতে হালদা নদীকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতির দাবি করা হলেও বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণার সরকারি সিদ্ধান্ত হওয়ায় হালদা নিয়ে নতুন করে কর্ম প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সম্প্রতি হালদা নদীর উৎপত্তিস্থলসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে নদীটির বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে গেছেন।
রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দিন জানান, “জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী হালদা নদীকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা করার অনুমোদনও দিয়েছেন। এ কারণে নদীটির প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করতে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক(অর্থ ও প্রশাসন) ড. খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গত ২২ জানুয়ারি বুধবার উৎপত্তিস্থল থেকে বিভিন্ন এলাকায় নদীর বর্তমান অবস্থা সরেজমিনে দেখে গেছেন। নদীর দুই পাড়ের উপজেলাগুলোতে স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন মিটিংও করেছন তিনি।”
এদিকে, হালদা নদীকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণার সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশের নদীবান্ধব নাগরিকদের জন্য সুখবর উল্লেখ করে হালদা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, এ ঘোষণা নদী রক্ষা কমিটির বিগত ১৫ বছরের আন্দোলনের আরেকটি সফলতা। তিনি এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনিও আরও বলেন, হালদা নদীর উৎস, সম্পদ, ঐতিহ্য এবং অর্থনৈতিক অবদান বিবেচনা করলে এ নদী বাংলাদেশের জাতীয় নদীর স্বীকৃতি পাওয়ার উপযুক্ত। বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণার ফলে হালদা নদী নতুন প্রাণ ফিরে পাবে এবং মৎস্য সম্পদসহ জীব বৈচিত্র্য রক্ষা পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের বেলছড়ি নামক দুর্গম এলাকার হাসুকপাড়া পাহাড় থেকে হালদা নদীর উৎপত্তি হয়ে মানিকছড়ি, ফটিকছড়ি, রাউজান ও হাটহাজারি উপজেলার মধ্যদিয়ে কর্ণফুলী নদীতে মিলিত হয়েছে। অপার জীব বৈচিত্র্য ও মৎস্য সম্পদে ভরপুর এ নদী জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে। এটি বাংলাদেশের একমাত্র রুই জাতীয় মাছের (রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিগনি) প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র। এছাড়া বিশ্বের একমাত্র এই জোয়ার ভাটার নদী থেকে সরাসরি রুই জাতীয় মাছের ডিম সংগ্রহ করা হয়।