পাহাড়ে ধর্ষণ ইস্যুকে সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার নিন্দা পিসিসিপির
![]()
নিউজ ডেস্ক
পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলোকে সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার অভিযোগ তুলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন কায়েস ও সাধারণ সম্পাদক মো. হাবীব আজম এই নিন্দা জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি বহু-জাতিগোষ্ঠীর আবাসভূমি, যেখানে বাঙালি ও পাহাড়ি সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে পাশাপাশি বসবাস করছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধকে কিছু মহল সাম্প্রদায়িকভাবে কাজে লাগিয়ে এলাকায় বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
পিসিসিপি নেতৃবৃন্দের দাবি, ধর্ষণ একটি ঘৃণ্য সামাজিক অপরাধ; এটি জাতি, ধর্ম বা গোষ্ঠীভেদে আলাদা নয়। কিন্তু পাহাড়ে দেখা যায়, যখন কোনো উপজাতি নারী কোনো বাঙালি পুরুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, তখন কিছু আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন ও মানবাধিকারকর্মী বিষয়টি তদন্তের আগেই “জাতিগত নিপীড়ন” হিসেবে প্রচার করে জনমনে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেন।
অন্যদিকে, যখন কোনো উপজাতি নারী নিজ সম্প্রদায়ের সদস্যের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন, তখন একই সংগঠনগুলো নীরব থাকে—ফলে ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হয় বলে তারা মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে পাঁচটি মূল পয়েন্ট তুলে ধরে পিসিসিপি
অভিযোগে বৈষম্য ও বাছাই করা প্রতিবাদ: কিছু সংগঠন শুধু নির্দিষ্ট পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে সরব হয়; এতে ধর্ষণের বিচার নয়, বরং সাম্প্রদায়িক বিভাজনই বৃদ্ধি পায়।
তথ্য ও বাস্তবতা: বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাহাড়ে সংঘটিত যৌন নির্যাতনের অর্ধেকেরও বেশি ঘটনা উপজাতি সম্প্রদায়ের অভ্যন্তরে ঘটলেও সেগুলো প্রকাশ পায় না।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্য: কিছু সংগঠন আন্তর্জাতিক সহানুভূতি অর্জনের লক্ষ্যে ধর্ষণ ইস্যুকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
আইনি প্রক্রিয়া উপেক্ষা: আইন অনুযায়ী অপরাধের বিচার আদালতে হবে—কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে “জনতার বিচার” বা “প্রথাগত মীমাংসা”র নামে প্রকৃত অপরাধীরা রেহাই পেয়ে যাচ্ছে।
সমাধানের পথ: প্রতিটি ধর্ষণ মামলা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত, ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা; এবং অপরাধকে কোনোভাবেই জাতিগত বা রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত না করা।
সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে উদ্বেগ প্রকাশ
বিবৃতিতে সাম্প্রতিক রাঙামাটির কাপ্তাই ও খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় সংঘটিত ধর্ষণের ঘটনাগুলোর উল্লেখ করে বলা হয়, এসব ঘটনায়ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
তারা বলেন, “ধর্ষণ একটি সামাজিক অপরাধ, কোনো জাতিগত সংঘাত নয়। বাঙালি অপরাধী হোক বা উপজাতি—অপরাধী সবারই বিচার হওয়া উচিত। ন্যায়বিচারই পারে পাহাড়ে প্রকৃত শান্তি ফিরিয়ে আনতে।”
পিসিসিপি নেতৃবৃন্দ বলেন, “ধর্ষণ নয়, অপরাধীর বিচার—এই নীতি মেনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কেউ যেন এই সংবেদনশীল ইস্যুকে সাম্প্রদায়িক বা রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে—এ ব্যাপারে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।”
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।