বার্মাছড়িতে সেনা ক্যাম্প নির্মাণের গুজব: ইউপিডিএফের উসকানিমূলক প্রচারণা
![]()
নিউজ ডেস্ক
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার লক্ষীছড়ি উপজেলার বার্মাছড়ি এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিয়মিত টহল কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। একটি পক্ষ দাবি করছে, স্থানীয় একটি বৌদ্ধ বিহারের জমিতে নাকি সেনা ক্যাম্প নির্মাণ হচ্ছে। তবে প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে। তারা বলছে, ইউপিডিএফের একটি সক্রিয় গ্রুপ এই ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
সেনাবাহিনীর লক্ষীছড়ি জোনের আওতাধীন বার্মাছড়ি মুখ পাড়া এলাকায় সম্প্রতি সেনা উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের তথ্যমতে, ইউপিডিএফের সশস্ত্র সদস্যরা সেখানে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছিল—অস্ত্র ও সদস্য জড়ো করছিল। সেনাবাহিনীর টহল কার্যক্রম মূলত সেই পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা ঠেকানোর অংশ হিসেবেই দেখা যাচ্ছে।
অন্যদিকে, ইউপিডিএফ-সমর্থিত সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি ক্যামেরন দেওয়ানের নেতৃত্বে আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বার্মাছড়ি বাজারে “বিক্ষোভ কর্মসূচি”র ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সংগঠনটির দাবি—সেনারা নাকি বিহারের জমি দখল করে ক্যাম্প নির্মাণ করছে।
কিন্তু প্রশাসনের কর্মকর্তারা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট জমিটি কোনো বিহার বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নয়; বরং এটি দীর্ঘদিন ইউপিডিএফের তথাকথিত “কমান্ড পোস্ট” হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে।
খাগড়াছড়িন পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন,
“একটি সংগঠন ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে স্থানীয়দের উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। সেনাবাহিনীর নিয়মিত উপস্থিতিকে ক্যাম্প স্থাপন হিসেবে প্রচার করে তারা বিভ্রান্তি তৈরি করতে চাইছে। আমরা বিষয়টি নজরে রেখেছি।”
একজন স্থানীয় প্রবীণ নেতা জানান, সেনাবাহিনী এলাকায় টহল দিলে সাধারণ মানুষ স্বস্তি বোধ করে।
“আমরা ইউপিডিএফের ভয়ে বহু বছর আতঙ্কে ছিলাম। এখন সেনা টহল বাড়ায় নিশ্চিন্তে চলাফেরা করতে পারি,” — বলেন তিনি।
একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরও বলেন,
“এখানে নতুন কোনো স্থায়ী সেনা ক্যাম্প স্থাপনের পরিকল্পনা নেই। এটি সম্পূর্ণ নিরাপত্তা জোরদারের অংশ। ইউপিডিএফ ইচ্ছাকৃতভাবে এসব বিকৃতভাবে প্রচার করছে, যাতে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।”
স্থানীয় দোকানি মো. সোলেমান বলেন, “সেনারা থাকলে শান্তি থাকে, চাঁদাবাজি হয় না। ইউপিডিএফ তাদের কমান্ড পোষ্ট হারাচ্ছে বলেই এমন মিথ্যা রটনা ছড়াচ্ছে।”
এদিকে, আজকের ঘোষিত বিক্ষোভকে ঘিরে প্রশাসন ও সেনা কর্তৃপক্ষ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। বাজার ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে।
নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কেউ যদি শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করে, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সার্বিকভাবে বার্মাছড়িতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও, ইউপিডিএফের বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা প্রশাসনের কাছে উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।