মিয়ানমার বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যকার যুদ্ধে জনমানব শূন্য ২০টি গ্রাম
![]()
নিউজ ডেস্ক
মিয়ানমারে সেদেশের সরকারী বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যকার যুদ্ধের ভয়াবহতায় অন্তত ২০টি গ্রামের লোকজন তাদের আবাসস্থল ছেড়ে পালিয়ে যাবার খবর পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, দেশটির রাজ্যের কিয়াউকতাও ও চিন রাজ্যের পালেতওয়ার মধ্যবর্তী সীমান্তে কালাদান নদীর পূর্ব পাড়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও আরাকান আর্মির (এএ) মধ্যে মাসব্যাপী চলমান যুদ্ধের কারণে ওই অঞ্চলের প্রায় ২০টি গ্রাম মানুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
কালাদান নদীর পূর্ব পাড়ের সাতটি গ্রাম এবং পশ্চিম পাড়ের ১১টি গ্রাম জনশূন্য হয়ে গেছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে এই লড়াই চলছে। মন্ট থান পাইন, পিয়াইং তাইন এবং কিয়াউ শি পাইন গ্রামগুলোতে শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। শেলের আঘাতে বেশ কিছু গ্রামবাসী হতাহত হয়েছে বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মন্ট থান পাইন গ্রাম। শেলের আঘাতে গ্রামের ৬৬টি বাড়ির সবগুলো গুড়িয়ে গেছে। বহু গবাদি পশুও এতে মারা পড়েছে।
যুদ্ধের কারণে গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ট থান পাইন গ্রামের প্রশাসক বলেন, “আমাদের গ্রামকে ছাই করে দেয়া হয়েছে। বেশ কয়েকদিন আগেই সবগুলো ঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আর শুক্রবার গ্রামের উপাসনালয়ের উপর আর্টিলারি শেল পড়েছে”। তিনি আরও বলেন, “কালাদান নদীর পাড়ে যারা বাস করেন, তারা সবাই হয় পালেতওয়া অথবা কিয়াউকতাউতে পালিয়ে গেছে। এখনও প্রবল যুদ্ধ হচ্ছে। ফিরে যাওয়ার মতো কোন ঘর আর আমাদের নেই। এমনকি উপাসনার জায়গাটাও আমাদের শেষ হয়ে গেছে”।
রাখাইন রাজ্যের কিয়াউকতাউ এলাকার এমপি উ মাউং মাউং জানিয়েছেন, “বহু মানুষ শহর এলাকায় পালিয়ে গেছে। শহরের মানুষ শেলের শব্দ সহ্য করতে পারছে না”। কালাদান নদীর পূর্ব পাড়ে তিন মা গ্রামের কাছে বৃহস্পতিবার দুটো জঙ্গি বিমান নিয়ে হামলা করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।
স্থানীয়রা জানান, “তাদের গ্রামের কাছে প্রায় প্রতিদিনই লড়াই হচ্ছে। আজও সামরিক বাহিনী দুটো জঙ্গি বিমান নিয়ে হামলা করেছে। গ্রামের বাইরে পাহাড়ের উপর সামরিক বাহিনী অবস্থান নিয়েছে। তারা শেলও নিক্ষেপ করেছে। ভারী বন্দুকের শব্দ সহ্য করতে না পেরে, তারা মঠ বন্ধ করে পালিয়ে এসেছেন”।
এদিকে, সামরিক বাহিনী এবং আরাকান আর্মি উভয়েই নিশ্চিত করেছে যে, আরাকান আর্মির যোদ্ধা আর ৭ নং লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নের মধ্যে লড়াই হয়েছে।
উল্লেখ্য, পালেতওয়া টাউনশিপের মিওয়া পাহাড়চূড়ার সামরিক বাহিনীর আউটপোস্টকে ঘিরে এই যুদ্ধ চলছে। আরাকান আর্মি এই আউটপোস্টটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করেছিল বলে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে।