সাজেকের দুর্গম শিলাদহে হামে আক্রান্তদের পাশে সেনাবাহিনী - Southeast Asia Journal

সাজেকের দুর্গম শিলাদহে হামে আক্রান্তদের পাশে সেনাবাহিনী

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়িতে হাম রোগে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৮ শিশু নিহত হয়েছে। দুর্গমতার কারণে জেলা সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা সহজে আক্রান্ত এলাকায় পৌঁছে দ্রুত সময়ের মধ্যে চিকিৎসা সেবা দিতে না পারায় আক্রান্তের সংখ্যা ১২৩ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, গত দুই মাস যাবত সাজেকের শিয়ালদহ পাড়া সংলগ্ন লুন্থিয়ানপাড়া এবং অরুণ পাড়ায় হাম রোগের আবির্ভাব হয়। প্রথমত রোগের কারণ উদঘাটন করতে পারেনি স্থানীয়রা। পরবর্তিতে কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা দেয় হামের লক্ষণ। কিন্তু ততক্ষণে প্রান হারায় ৫ টি শিশু এবং আক্রান্ত হয় শতাধিক শিশু যার মধ্যে বৃদ্ধ বয়সী লোকজনও রয়েছেন। গত ২২ মার্চ রবিবার অবহেলা এবং কুসংস্কারজনিত কারণে গেরেথি ত্রিপুরা (৯) নামের আরো এক শিশু প্রাণ হারায়। সেই সুত্র ধরে ২৪ মার্চ মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে মারা যায় আরো ২ টি শিশু। এখন মৃতের সংখ্যা সর্বমোট ৮ জন।

এদিকে এঘটনার খবর পাওয়া মাত্র বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হামে আক্রান্তদের জন্য তাদের মানবতার হাত বাড়িয়ে দেয়। মঙ্গলবার দুপুর আনুমানিক ১ টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি চিকিৎসক দল এবং ৪ জন বেসামরিক ডাক্তার হেলিকপ্টার যোগে শিলাদহপাড়ায় যায় বলে জানা গেছে। সূত্রটি জানিয়েছে ২ দিনে এই শতাধিক রোগীর চিকিৎসা করার লক্ষ্যে আগামীকাল (২৫ মার্চ) থেকে লুন্থিয়ানপাড়া এবং অরুণ পাড়ার সকল রোগী সেনাবাহিনী তাদের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করবে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়ন আক্রান্ত এলাকার জণগণের জন্য ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে পুষ্টিকর খাবার ও সুপেয় পানি পাঠিয়েছে বলে জানা যায়।

স্থানীয় পাড়া প্রধান (কার্বারী) সূত্রে জানা যায়, সেনাবাহিনীর এমন মানবিক কর্মকান্ডে দূর্গম সাজেকে বসবাসরত সাধারণ মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেছে।

এখানে উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রামের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়িয়েছে। দূর্গমতার কারণে শিয়ালদহ এলাকায় প্রায়শই অভাব অনটনসহ বিভিন্ন মহামারির প্রকোপ দেখা দেয়। এখানে সুপেয় পানি সংগ্রহ করা অত্যন্ত দুঃসাধ্য। তাই ঐ এলাকার নিরীহ জনগণকে নিজেদের শারীরিক ঝুঁকি নিয়ে দিনযাপন করতে হয়। ইতিপূর্বে ২০১৫ সালে ব্যাপকভাবে কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে শিয়ালদহে প্রায় শতাধিক ব্যক্তিবর্গ মৃত্যুবরণ করে। ঐ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল হেলিকপ্টারে করে সেখানে গিয়ে একটি অস্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করে চিকিৎসা তৎপরতা পরিচালনা ও স্থানীয় জনগণকে প্রতিকুলতার মধ্যেও সুপেয় পানি সংগ্রহ করার বিভিন্ন পদ্ধতিমূলক প্রেষণা প্রদান করার ফলে বিপদজনক হয়ে উঠা মহামারি রোধ করা সম্ভব হয়েছিলো। সেসময়কার মতো বর্তমানেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের এই দূর্যোগ মুহূর্তে পাশে দাঁড়িয়েছে।