খাগড়াছড়িতে প্রশাসনের তৎপরতা চলমান, বিভিন্ন উপজেলায় কর্মহীন মানুষদের মাঝে সরকারী-বেসরকারী ত্রান বিতরণ
 
                 
নিউজ ডেস্ক
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধ, জনসচেতনতা সৃষ্টি, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও এর সংক্রমণ এড়াতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার অংশ হিসেবে খাগড়াছড়ি অব্যাহত রয়েছে সেনাবাহিনীর টহল, সাথে রয়েছে ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিশের অভিযান। এর পাশাপাশি জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে কর্মহীন মানুষদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে ত্রান সামগ্রী।
সকাল থেকেই (২৮ মার্চ) প্রবেশ মুখে প্রতি দিনের মতো নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী যুবকরা। জেলা সদরে প্রবেশ করা ব্যক্তি বা গাড়ি স্প্রে, লিফলেট বিতরণ ও মাস্ক বিতরণ করছে তারা। পাশাপাশি জেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিশের পাশাপাশি দেখা গেছে সেনাবাহিনীর টহল।
জেলা শহরের বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে বিতরণ করা হয়েছে ত্রান সামগ্রী। সকালে সদর উপজেলা পরিষদের পক্ষ হতে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে উপজেলা সদর এলাকায়। এর পাশাপাশি জেলা শহরের খেজুর বাগান এলাকায় একটি সংগঠনের পক্ষ হতে ৫০ পরিবারের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

এর বাইরে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের আয়োজনে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীর নেতৃত্বে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগন উপস্থিত ছিলেন। সভায় পাবত্য চট্টগাম বিষয়ক মন্ত্রনালয় কতৃক বরাদ্দকৃত অনুদান খাগড়াছড়ি জেলার গরীর- অসহায়, দিনমজুর, ও ভাসমান মানুষের তালিকা তৈরি করে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে প্রতি পরিবারকে ১০ কেজি চাল, ১ কেজি আলু, ৫০০ গ্রাম ডাল, ৫০০ গ্রাম তেল, ১ টি সাবান বিতরন করার সিদ্বান্ত গ্রহন করা।

করোনা প্রতিরোধে খাগড়াছড়ির পানছড়িতে আজও অব্যাহত রয়েছে সেনাবাহিনীর জনসচেতনামূলক কার্যক্রম। করোনা প্রতিরোধে উপজেলার গুরুত্বপূর্ন স্থানগুলোতে বন্ধ রয়েছে জনসমাগম। পানছড়ি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে দুপুরে ত্রান বিতরণ করা হয় উপজেলার কর্মজীবি মানুষের মাঝে। চেঙ্গী ইউনিয়নসহ লোগাং এবং লতিবান ইউনিয়নের মোট ৬০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। বিতরণকৃত ত্রানের মধ্যে ছিলো, চাউল ১০ কেজি, ডাল ৫০০ গ্রাম, তৈল ৫০০ গ্রাম, লবণ ৫০০ গ্রাম।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে সিভিল প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে দীঘিনালা উপজেলা প্রশাসন ও থানার সমন্বয়ে সেনা ও পুলিশের যৌথ টহল অব্যাহত রয়েছে। সকাল থেকেই উপজেলার বোয়ালখালী, বারাদম, বাবুছড়া, জারুলছড়ি এলাকায় সেনাবাহিনী কর্তৃক মাইকিং, লিফলেট বিতরনসহ সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সকলকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা সদরে অব্যাহত রয়েছে ভ্রাম্যমান আদালতের কার্যক্রম। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাশেম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ।

জেলার প্রবেশমুখ রামগড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার অংশ হিসেবে অব্যাহত রয়েছে সেনা ও পুলিশের যৌথ টহল। পাশাপাশি বাজারে এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের বিভিন্ন অভিযানও অব্যাহত আছে। সকালে জনসচেতনতায় বিভিন্ন দোকানের সামনে দূরত্ব বজায় রেখে চিহ্ন অঙ্কন ও লিফলেট বিতরণ করেছে যুব রেড ক্রিসেন্টের কর্মীরা। পাশাপাশি রামগড় পৌরসভার এক কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত অর্থায়নে উপজেলার প্রায় ৫০০ কর্মহীন পরিবারের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

মহালছড়িতে করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনে থাকা লোকজনকে সরকারী সহায়তার অংশ হিসেবে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দত্তের নেতৃত্বে এসব ত্রান বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ হতেও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রান বিতরণ করা হয়।

মানিকছড়িতে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের পক্ষ হতে পৃথকভাবে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। মানিকছড়ি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদের নেতৃত্বে ত্রান বিতরণকালে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব মো: জয়নাল আবেদীন, মানিকছড়ি সাব জোন কমান্ডার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: কামাল উদ্দিন প্রমুখ। এছাড়া থানা পুলিশের পক্ষ হতে ত্রান বিতরণ করেন মানিকছড়ি সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
