দীঘিনালায় ফের হামে আক্রান্ত হয়ে ১৭ শিশু হাসপাতালে
![]()
নিউজ ডেস্ক
গত ২৯শে ফেব্রুয়ারি মহামারি হাম রোগে আক্রান্ত হয়ে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় এক শিশু ও এর আগে একই মাসে সেই এলাকায় আরো ২শিশুর মৃত্যু ও কয়েকজন আক্রান্ত হবার পর সেখানে তাৎক্ষনিক চিকিৎসা সেবা শুরু করে স্বাস্থ্য বিভাগ। এবার এক সপ্তাহের ব্যবধানে একই উপজেলায় নতুন করে আরও ১৪ শিশু হাম রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
গত বুধবার (৮ এপ্রিল) দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়ন দুর্গম রথীচন্দ্র কার্বারী পাড়া থেকে নতুন করে হাম রোগে আক্রান্ত ১৩ শিশু ও অন্যান্য রোগে ৩ জনকে দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯ টায় একই ইউনিয়ন ৯ মাইল তপন কার্বারী পাড়া থেকে খঞ্জনা ত্রিপুরা নামে আরও ৮ বছরের এক শিশু ভর্তি হয়েছে। আক্রান্তদের বয়স ২ থেকে ১৭ বছর বলে জানা গেছে। শিশু ছাড়াও তিন জন বয়স্ক লোক অসুস্থ হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তনয় তালুকদারকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি দৈনিক প্রতিদিনের চিত্র খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধিকে জানান, যারা ভর্তি হয়েছে এরা কিন্তু সবাই হাম রোগী না। হামের লক্ষণ অনুসারে আমাদের হিসাবে বর্তমানে হামে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬ জন (৯ তারিখের সহ), বাকী রোগী হচ্ছে অন্যান্য রোগ। এছাড়াও হাম আক্রান্ত দীঘিনালার প্রায় ৭টি গ্রামে আগামী শনিবার (১১ এপ্রিল) থেকে হামের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। ৯ মাস বয়স থেকে ১৫ বছরের নিচে বাচ্চাদের এসব টিকা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
রোগী খঞ্জনা ত্রিপুরার বাবা দীপ্তি রঞ্জন ত্রিপুরা জানান, গত সপ্তাহে বড় মেয়েকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে এক লক্ষণে ভর্তি করে পরে সুস্থ হয়ে বাসায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু এক সপ্তাহ পার হতে না হতে আরও ছোট মেয়ে একই লক্ষণ হলে দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি দিই। বর্তমানে চিকিৎসা চলছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় মেরুং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার গনেশচন্দ্র ত্রিপুরা জানান, আগামী শনিবার (১১ এপ্রিল) থেকে টিকা দান কর্মসূচী করা হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। যদি শীঘ্রই টিকা দেওয়া হয় তাহলে ভাল হবে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে দুপুর ১টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাম রোগে আক্রান্ত সকল রোগীদের উন্নত মানের খাবার বিতরণ করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দীঘিনালা জোনের সদস্যবৃন্দ।
এর আগে গত রবিবার (২৯ মার্চ) হাম রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় রথিচন্দ্র কার্বারী পাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ধনিকা ত্রিপুরা। একই ইউনিয়নের তৈদু পাড়ায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নেভারঞ্জন ত্রিপুরা ও হরবালা ত্রিপুরার চার বছরের ছেলে চৌকার ত্রিপুরা এবং প্রমুল ত্রিপুরা ও কলইতি ত্রিপুরার ছেলে দিশা (৩) মারা যায়। অন্যদিকে সদর জেলার সদর উপজেলা ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের ছয় জন শিশু মারা যায়। এছাড়া আক্রান্ত রোগীদের হিসাব করলে বেসরকারি হিসাবে দুই শতাধিক অধিক হয়েছে। তবে সরকারি হিসাবে এখনো শতাধিক হয়েছে কিনা তা সন্দেহ।