শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়াল সামিটঃ সহযোগিতা বাড়িয়ে অর্থনীতি সংহত করায় গুরুত্বারোপ
![]()
নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রয়েছে, তা আরো বাড়িয়ে দুই দেশের অর্থনীতিকে সংহত করার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা মহামারীর মধ্যে গতকাল (১৭ ডিসেম্বর) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভার্চুয়াল সামিটে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান পারস্পরিক নির্ভরতা আমরা আনন্দের সঙ্গে স্বীকৃতি দিই। আমি বিশ্বাস করি, উভয় দেশ বিদ্যমান সহযোগিতামূলক ঐকমত্যের সুযোগ নিয়ে আমাদের অর্থনীতিকে আরো সংহত করে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক ভ্যালু-চেইন আরো সমৃদ্ধ করতে পারে। গতকালের ভার্চুয়াল এ বৈঠকে ঢাকা থেকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নয়াদিল্লি থেকে যোগ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ অনুষ্ঠানে নীলফামারীর চিলাহাটি সীমান্ত দিয়ে ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগেরও উদ্বোধন করেন তারা। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় ওই রেলপথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। দীর্ঘ ৫৫ বছর পর গতকাল আবারো চালু হলো চিলাহাটির সঙ্গে ভারতের হলদিবাড়ির সেই পুরনো রেল রুট। এছাড়া দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সম্মানে ভারতের ডাক বিভাগের একটি স্মারক ডাক টিকিট অবমুক্ত এবং ‘বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল এক্সিবিশনে’রও উদ্বোধন করেন।
বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে বিশ্ব এক মহাবিপর্যয়ের সম্মুখীন এবং মানবজাতি কীভাবে এ অজানা শত্রুর মোকাবেলা করে, সে পরীক্ষার মুখোমুখি। মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা করতে ব্যাপক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইনে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটা এবং ভোক্তাদের চাহিদা হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও আমাদের অর্থনীতি ঊর্ধ্বমুখী প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। দুই দেশের যোগাযোগ বাড়াতে উভয় দেশের নেয়া উদ্যোগগুলোর কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ২০২০ সালজুড়ে রেল রুট দিয়ে বাণিজ্য, উচ্চপর্যায়ের পরিদর্শন ও সভা, সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ, কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে ভারতীয় পণ্যের প্রথম পরীক্ষামূলক চালান পাঠানো এবং অবশ্যই কভিড-১৯ বিষয়ে সহযোগিতার মতো বিভিন্ন উদ্যোগ আমরা নিয়েছি।
করোনা পরিস্থিতি ভালো থাকলে আগামী ২৬ মার্চ নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে উপস্থিতি প্রত্যাশা করে শেখ হাসিনা বলেন, গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানগুলো যৌথভাবে উদযাপনের জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে একত্রিত হওয়ার জন্য আপনাকে এবং আপনার সরকারের প্রতি আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অবিচ্ছেদ্য যোগসূত্র স্মরণে আমরা বিশ্বব্যাপী বাছাই করা কিছু শহরে আগামী বছরজুড়ে যৌথ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় আপনার উপস্থিতি আমাদের যৌথ উদযাপনের গৌরবময় স্মৃতি স্মরণীয় করে রাখবে। বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ডিসেম্বরে বাংলাদেশের মানুষ আনন্দ, মুক্তি ও উদযাপনের চেতনায় উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যার গতিশীল নেতৃত্বে আমরা মহান স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক প্রতিনিয়ত শক্তিশালী হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব ও দ্বিপক্ষীয় আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো শক্তিশালী করাকে আমি অগ্রাধিকার দিয়েছি। আগামী ২৬ মার্চ বাংলাদেশে আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে মোদি বলেন, আগামী বছর বাংলাদেশ সফরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ পাওয়া আমার জন্য সম্মানজনক।
দুই সরকারপ্রধানের সঙ্গে ভার্চুয়ালি আলোচনার আগে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাণিজ্য, জ্বালানি, কৃষি, পরিবেশসহ বিভিন্ন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতায় সাতটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ ও ভারত। বাংলাদেশের পক্ষে নিজ নিজ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা এবং ভারতের পক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী চুক্তিগুলোতে স্বাক্ষর করেন।
দুই দেশের মধ্যে যেসব বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সিইও ফোরাম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সহযোগিতা, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে হাইড্রোকার্বন বিষয়ে সহযোগিতা, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে হাতি সংরক্ষণ বিষয়ে সহযোগিতা, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল জাদুঘর ও ভারতের জাতীয় জাদুঘরের মধ্যে সহযোগিতা, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ও বরিশালের সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট-সংক্রান্ত সহযোগিতা চুক্তি। এ সমঝোতা চুক্তির আওতায় বরিশালের লামচড়ি অঞ্চলে পয়োনিষ্কাশন কার্যক্রমে সরঞ্জাম সরবরাহ করবে ভারত।
প্রথম চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশের সিওও ফোরাম গঠনে স্বাক্ষর করেন বাণিজ্য সচিব মোহাম্মদ জাফর উদ্দিন ও ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। সমঝোতা চুক্তির আওতায় কৃষি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে দুই দেশ। এছাড়া হাইড্রোকার্বন খাতে ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের জ্বালানি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম ফজলুল হক। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী খালিদ হোসেন ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
[7:05 pm, 18/12/2020] Md Saiful Islam: দেশের ১১ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ
নিউজ ডেস্ক
দেশের ১১টি জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুই ডিসিকে বদলি করে অন্য জেলায় দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আর বাকিদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে বদলি করে নতুন দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গত ১৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
নতুন ডিসিদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানকে চট্টগ্রামে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর একান্ত সচিব হাবিবুর রহমানকে বরগুনায়, জননিরাপত্তা বিভাগে সংযুক্ত উপসচিব মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানকে নড়াইলে, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব এ এন এম ফয়জুল হককে বাগেরহাটে, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপসচিব অঞ্জনা খান মজলিসকে চাঁদপুরে, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের উপসচিব মো. আনোয়ার হোসেন আকন্দকে লক্ষ্মীপুরে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক জসিম উদ্দিন হায়দারকে বরিশালে, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব ইয়াসমিন পারভীন তিবরিজিকে বান্দরবানে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে সুনামগঞ্জের ডিসি করা হয়েছে। ওই সব জেলার বর্তমান ডিসিদের অন্যান্য জায়গায় বদলি করা হয়েছে।
যে দুই ডিসিকে বদলি করা হয়েছে তাদের মধ্যে বাগেরহাটের ডিসি মো. মামুনুর রশিদকে কক্সবাজারের এবং বরগুনার ডিসি মুস্তাইন বিল্লাহকে নারায়ণগঞ্জের ডিসি করা হয়েছে।