রোহিঙ্গা প্রত‌্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চায় বাংলাদেশ - Southeast Asia Journal

রোহিঙ্গা প্রত‌্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চায় বাংলাদেশ

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের সচিব পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি)। বৈঠকে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা প্রত‌্যাবাসনের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করতে চায় বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বৈঠকের বিষয়ে বলেন, রোহিঙ্গা প্রত‌্যাবাসন নিয়ে অনেকদিন ধরেই আমরা আলোচনা করে আসছি। কিন্তু মিয়ানমারের অসহযোগিতায় বিষয়টির সমাধান আটকে আছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সায় দিয়েও তারা শেষ সময়ে অসহযোগিতা করে। এরপর থেকে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মিয়ানমারকে এ পর্যন্ত আট লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা আমরা পাঠিয়েছি। কয়েক দফায় তা পাঠানো হয়। সম্প্রতি পাঠানো হয়েছে দুই লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা। কিন্তু দুঃখজনক হলো মিয়ানমার খুব ধীরগতিতে এগোচ্ছে। দেশটির আন্তরিকতার খুব অভাব। আশা করছি, এই বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হবে।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমরা চাই, বর্ষার আগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হোক। এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় দেশটির আন্তরিকতার অভাবের পাশাপাশি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জও রয়েছে। তাই আমরা প্রত‌্যাবাসন প্রক্রিয়ার পদ্ধতিগত দিক নিয়ে আলোচনা করতে পারি। তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা গ্রামভিত্তিক রোহিঙ্গা প্রত‌্যাবাসন দিয়ে শুরু করা। একটি গ্রামে ১ বা ২ হাজার লোক থাকে সাধারণত। বিক্ষিপ্তভাবে রোহিঙ্গা নির্বাচন করার বদলে গ্রাম বা অঞ্চলভিত্তিক যদি নির্বাচন করি, সেটি বরং বেশি বাস্তবসম্মত হবে। এভাবেই আমরা আগানোর চেষ্টা করব। একটি গ্রাম বা অঞ্চলের রোহিঙ্গাদের নির্বাচন করে, পাইলট ভিত্তিতে তাদের ফেরত পাঠালে সেটি বাস্তবসম্মত হবে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে মিয়ানমারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর।

এদিকে, কূটনৈতিক দিক থেকে এই বৈঠককে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন বলে মনে করেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাই গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন আদেশটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে তুলে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। তারা বলছেন, এই বৈঠকের মাধ্যমে সংকট সমাধানের দিকে আগানো যেতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক, অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে, চীনের সমর্থন ছাড়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব নয়। মিয়ানমারকে রাজিও করানো যাবে না। তাই চীনের বিষয়ে সরকারের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন। এমনকি এই বৈঠক ঘিরেও তেমন কোনো পরিকল্পনা থাকা দরকার।

প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে মঙ্গলবার ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন। বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

শেষ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছিল গত বছরের ২০ জানুয়ারি। এরপর চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি চীনের মধ্যস্থতায় সচিব পর্যায়ে একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মিয়ানমার পিছিয়ে দেয়। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই মুহূর্তে মিয়ানমার সফরে রয়েছেন। সেই কারণে মিয়ানমার বৈঠক পিছিয়ে দিয়েছিল। সচিব পর্যায়ের ওই বৈঠকটি আগামীকাল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

You may have missed