গৃহবন্দী সু চির বিচার শুরু
নিউজ ডেস্ক
সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমার জুড়ে সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে গৃহবন্দী নেত্রী অং সান সু চিকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে সু চিকে আদালতে তোলা হয়।
রেডিও তেহরানের অনলাইন সংস্করণ পার্সটুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সু চির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হলে কয়েক দশকের জেল হতে পারে। এ মামলায় ইতোমধ্যে সরকারি কৌঁসুলিদের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত।
ট্রায়াল সেশনের পর সু চির আইনজীবী খিন মং জাও বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তার মক্কেল নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। এ সময় তিনি সু চির নিঃশর্ত মুক্তি চান।
এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর অসুস্থতার কথা জানিয়ে অনুপস্থিতির আবেদন করেন সু চি। আদালত চলাকালে আইনজীবীরা বিচারকরা তার অসুস্থতার কথা অবহিত করেন। পরে আদালত মুলতবি করা হয়।
গত বছরের নির্বাচনের সময় সু চি করোনা ভাইরাসের নিয়ন্ত্রণ লঙ্ঘন করেন। ওই নির্বাচনে তার দল লীগ ফর ডেমোক্রেসি বিপুল বিজয় লাভ করে তবে সামরিক বাহিনী দাবি করেছিল, নির্বাচনে বড় রকমের অনিয়ম হয়েছে।
পরে চলতি বছরের প্রথম দিকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অভ্যত্থানের মাধ্যমে সু চি ও তার দলকে ক্ষমতাচ্যুত করে। তবে সু চিকে আটকের পরপরই দেশের জনগণ ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ ভাঙা ও অবৈধভাবে ওয়াকিটকি রাখার মামলায় রাজধানী নেপিডোর আদালতে সু চির বিচার চলছে। জান্তা সরকার তার বিরুদ্ধে আরও চারটি দুর্নীতির মামলা দায়ের করেছেন।
গত ১ আগস্ট মিয়ানমারের জান্তা সরকারের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করেন সামরিক শাসক মিন অং হ্লাইং। তিনি আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে নতুন বহু দলীয় নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
দেশটির মায়াবতী টেলিভিশনে বলা হয়, দেশের দায়িত্ব গতিশীল, সহজ ও কার্যকর করতে কাউন্সিলকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপ দেওয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের সংঘাত বন্ধ এবং জান্তা সরকার ও তার বিরোধীদের মধ্যে আলোচনা ছাড়া কোনো পথ নেই বলে মনে করছে জাতিসংঘ। এছাড়াও সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিকভাবে জোরাল পদক্ষেপ নিতে আসিয়ানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটির সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর ওপর নজর রাখা সংগঠন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) হিসাবে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত সাত হাজারের জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে মারা গেছে প্রায় এক হাজার জন।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দাবি, অভ্যুত্থানের পর মারা যাওয়া বিদ্রোহীদের সংখ্যা খুবই কম। এছাড়া সহিংসতায় মারা গেছে সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য দেশের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে রয়েছে।