দশম দফায় ৭১৮ রোহিঙ্গা রোহিঙ্গার ভাসানচর যাত্রা
নিউজ ডেস্ক
নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করা হচ্ছে আরও ৭১৮ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে। রোহিঙ্গা স্থানান্তর প্রক্রিয়ার দশম দফার প্রথম ধাপে কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয় শিবির থেকে এই ৭১৮ রোহিঙ্গাকে নিয়ে ১৩টি বাস উখিয়া থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের এই বহরে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা লক্ষ্য করা গেছে।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে বাসগুলো রওনা দেয় বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা নয়ন।
তিনি বলেন, দুপুরে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন আশ্রয় শিবির থেকে দশম দফার প্রথম ধাপে ৭১৮ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে ১৩টি বাস চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। চট্টগ্রাম পৌঁছানোর পর এসব রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বহনকারী কয়েকটি গাড়িও একই সময়ে রওনা দিয়েছে বলে জানান সামছু-দ্দৌজা।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার বলেন, স্বেচ্ছায় ভাসানচর যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের জন্য উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে একটি অস্থায়ী বুথ খোলা হয়েছে। সেখানে তাদের নাম নিবন্ধন করা হচ্ছে। শুধুমাত্র স্বেচ্ছায় ভাসানচর যেতে ইচ্ছুক নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা হচ্ছে।
২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরগুলো থেকে প্রথমবারের মত রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের কার্যক্রম শুরু হয়।
এরপর দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে গত বছরের ৯ অক্টোবর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সহায়তা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার সম্মতি প্রকাশ করে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা-ইউএনএইচসিআর।
এর আগে ৯ দফায় কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরগুলো থেকে ১৯ হাজার ৮৪৮ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়। এবার দশম দফার প্রথম ধাপে যাচ্ছে আরও ৭১৮ জন। এর মধ্য দিয়ে ভাসানচরে পাড়ি জমানো রোহিঙ্গা নাগরিকের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ২০ হাজার ৫৬৬ জনে।
২০২০ সালে ভাসানচরের আশ্রয় শিবির গড়ে এক লাখ রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নেয় সরকারের। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গার ধারণক্ষমতার আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।
সেনা নিপীড়নের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট সাগর ও সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। পরের কয়েক মাসে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে আসছিল বাংলাদেশ। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয় শিবিরে প্রায় সাড়ে ১১ লাখের মতো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বাস।