সেনাবাহিনীতে যোগ না দিলে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ বন্ধ করার হুমকি জান্তার
নিউজ ডেস্ক
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে জোরজবরদস্তি করা হচ্ছে। দেয়া হচ্ছে হুমকি-ধামকি। এমনকি জরিমানাও করা হচ্ছে। এবার ত্রাণ সহায়তা বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে জান্তা কর্তৃপক্ষ।
মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নারিনজারার এক প্রতিবেদন মতে, রাখাইন রাজ্যের সিত্তে এলাকায় মুসলিম গ্রামবাসীদের সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যথায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয়, সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানালে পরিবার প্রতি ৫০ হাজার কিয়াট (মিয়ানমারের মুদ্রা) জরিমানা দিতে হবে বলেও জানানো হয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই নতুন অত্যাচারে উভয় সংকটে পড়েছে রাখাইনের রোহিঙ্গারা যাদের বেশিরভাগই কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছে।
সম্প্রতি জান্তার বিরুদ্ধে যে সশস্ত্র হামলা শুরু হয়, তাতে রাখাইনে পতনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে সেনাবাহিনী। বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) বঙ্গোপসাগর উপকূলের এই অঞ্চলের বেশিরভাগই দখল করে নিয়েছে। হারানো সেসব এলাকা পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছে জান্তা।
সেই লক্ষ্যে একসময় যাদের ওপর জাতিগত নিধন ও গণহত্যা চালিয়েছে, বিদ্রোহী দমনে সেই তাদেরই সাহায্য চাইছে মিয়ানমারের সেনা সরকার। রাখাইনের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা রোহিঙ্গাদের সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করছে।
খবরে বলা হয়েছে, রাখাইনের গ্রামগুলো থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার মুসলিম যুবককে সেনাবাহিনীতে যোগদান করতে বাধ্য করা হয়েছে। সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণের পর তাদের অনেককেই যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে অনেকেই নিহত হয়েছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে আসছে।
২০১২ সালে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা রাখাইনের অভ্যন্তরেই বাস্তুচ্যুত হয়ে বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এর পাঁচ বছর পর ২০১৭ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। নির্বিচারে হত্যা করা হয় তাদের।
সে সময় প্রাণ বাঁচাতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে এ পরিস্থিতিকে ‘জাতিগত নিধন’র উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। গণহত্যার অভিযোগে হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে চলছে বিচার।