পাহাড়ে ইউপিডিএফ-জেএসএসের আধিপত্যের লড়াইয়ে তিন দশকে ২ হাজার প্রাণহানি

পাহাড়ে ইউপিডিএফ-জেএসএসের আধিপত্যের লড়াইয়ে তিন দশকে ২ হাজার প্রাণহানি

পাহাড়ে ইউপিডিএফ-জেএসএসের আধিপত্যের লড়াইয়ে তিন দশকে ২ হাজার প্রাণহানি
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

পাহাড়ি সংগঠনগুলোর আধিপত্যের লড়াইয়ে কোনোভাবেই যেন শান্ত হচ্ছে না পার্বত্য অঞ্চলে। আগে শুধু জনসংহতি সমিতি-জেএসএস ও ইউপিডিএফের মধ্যে সংঘাত হলেও, নতুন করে অন্তত চারটি সংগঠন সৃষ্টি হওয়ায় সংঘাতের মাত্রা বাড়ছে। খাগড়াছড়িতেই গত তিন মাসে খুন হয়েছেন ৬ জন। আর তিন দশকে এই তিন পাহাড়ি অঞ্চলে অভ্যন্তরীণ বিরোধসহ নানা সংঘাতে দুই হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কাছে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা না গেলে সংঘাত নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে খাগড়াছড়িকেই সবচেয়ে বেশি সংঘাতপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে আসছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিশেষ করে দুই যুগের বেশি সময় ধরে এখানে শান্তি চুক্তির পক্ষের সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য জনসংহতি সমিতি-জেএসএস এবং ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-ইউপিডিএফের বিরোধ চলে আসছে।

সবশেষ গত তিন মাসে পানছড়িতে ৫ জন এবং দীঘিনালায় ২ জন খুন হয়েছে আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে। এখানকার প্রতিটি সন্ত্রাসী গ্রুপের হাতে রয়েছে এ কে ফোরটি সেভেন এবং এম সিক্সটিনের মতো অত্যাধুনিক ভারী অস্ত্র।

স্থানীয়রা জানান, এখানে চারটি গ্রুপ আছে। প্রতি গ্রুপকে আলাদা আলাদা চাঁদা দিতে হয়। আগে একটা গ্রুপকে চাঁদা দিলেই হতো। শান্তিচুক্তির পর কোথাও কোথাও ছয় গ্রুপকে চাঁদা দিতে হচ্ছে।

এক সময়ের শান্ত পাহাড়ি অঞ্চল এবং পর্যটকদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র বান্দরবান জেলাতেও চলছে আধিপত্যের লড়াই। এখানে জেএসএস-ইউপিডিএফের পাশাপাশি রয়েছে জেএসএস সংস্কার, ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক, মগ পার্টি এবং কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। বাকি সংগঠনগুলোর চেয়ে কেএনএফ এ অঞ্চলে ব্যাংক ডাকাতির মতো ভয়ংকর অপরাধ করেই অবস্থান জানান দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি কেএনএফের অপতৎপতার কারণে মাসের পর মাস এখানকার পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের নিষেধাজ্ঞা দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। অবশ্য সেনাবাহিনীসহ যৌথবাহিনী প্রায়ই অভিযান চালিয়ে ধ্বংস করছে কেএনএফের গোপন আস্তানা।

স্থানীয়রা জানান, আধিপত্য বিস্তারের জন্য তারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। ফলে দিনে দিনে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ছে এক সময়ের শান্তিপূর্ণ এ জেলা।

শুধু রাঙ্গামাটি জেলাতেই গত এক দশকে অন্তত ৪০০ খুন হয়েছে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে। তবে সম্প্রতি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় পাহাড়ি সংগঠনগুলোর মধ্যে সশস্ত্র লড়াইয়ের মাত্রা কিছুটা কমলেও বন্ধ নেই চাঁদাবাজি। বাকি জেলাগুলোর বিপরীতে এখানে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর চাঁদা আদায়ের হার তুলনামূলক বেশি। চাঁদা আদায়ের ক্ষেত্রে সংগঠনগুলোর যেমন অলিখিত বোঝাপড়া রয়েছে, তেমনি যারা চাঁদা দিচ্ছেন তারাও রহস্যজনক কারণে নীরবে সব সহ্য করে যাচ্ছেন।

গত তিন দশকে এই তিন পাহাড়ি অঞ্চলে অভ্যন্তরীণ বিরোধসহ নানা সংঘাতে দুই হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আর কত মানুষ আহত হয়েছেন তার কোনো পরিসংখ্যান নেই কারও কাছে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।