রোহিঙ্গা সংকট আর ক্যাম্পে থাকছে না, এটি এখন আঞ্চলিক - Southeast Asia Journal

রোহিঙ্গা সংকট আর ক্যাম্পে থাকছে না, এটি এখন আঞ্চলিক

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

ডেস্ক রিপোর্ট

দীর্ঘ ২ বছরেও মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংকট নিরসন না হওয়াকে দুঃখজনক মন্তব্য করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ সংকট এখন আর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না। এটি এখন আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট সবাইকে অনুধাবন ও এ বিষয়ে সর্তক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি অনুরোধ করবো, এই সমস্যার অনিশ্চয়তার বিষয়টি যেন সবাই অনুধাবন করেন। এই সমস্যা এখন আর বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না। বাংলাদেশের সব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বিষয়টি এখন আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিউইর্য়কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এবারের অধিবেশনে নতুন চারটি প্রস্তাব প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমি এর আগে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং রাখাইন প্রদেশে বেসামরিক তত্ত্বাবধানে সুরক্ষা বলয় প্রতিষ্ঠাসহ পাঁচ-দফা প্রস্তাব পেশ করেছিলাম।

আজ কিছু প্রস্তাব আবার পেশ করছি:
১. রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন ও আত্মীকরণে মিয়ানমারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক সদিচ্ছার পূর্ণ প্রতিফলন দেখাতে হবে।

২. বৈষম্যমূলক আইন ও রীতি বিলোপ করে মিয়ানমারের প্রতি রোহিঙ্গাদের আস্থা তৈরি করতে হবে এবং রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের উত্তর রাখাইন সফরের আয়োজন করতে হবে।

৩. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বেসামরিক পর্যবেক্ষক মোতায়েনের মাধ্যমে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

৪. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবশ্যই রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ বিবেচনায় আনতে হবে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অন্যান্য নৃশংসতার দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন প্রলম্বিত হওয়া প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এটি বাস্তবিকপক্ষেই দুঃখজনক যে রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান না হওয়ায় আজ এই মহান সভায় বিষয়টি আমাকে পুনরায় উত্থাপন করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, যদিও রোহিঙ্গা সমস্যা প্রলম্বিত হয়ে তৃতীয় বছরে পদার্পণ করেছে, কিন্তু মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও চলাফেরার স্বাধীনতা এবং সামগ্রিকভাবে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও মিয়ানমারে ফিরে যায়নি। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এমন একটি সমস্যার বোঝা বহন করে চলেছি যা মিয়নামারের তৈরি। এটি সম্পূর্ণ মিয়ানমার ও তার নিজস্ব নাগরিক রোহিঙ্গাদের মধ্যকার একটি সমস্যা। তাদের নিজেদেরই এর সমাধান করতে হবে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমেই এ সংকট সমাধান সম্ভব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, সুরক্ষিত ও সম্মানের সঙ্গে স্বেচ্ছায় রাখাইনে নিজগৃহে ফিরে যাওয়ার মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সম্পন্ন করতে মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের আলাপ-আলোচনা অব্যাহত থাকবে। নতুন দায়িত্বে আসা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনের সভাপতি তিজানি মুহাম্মদ বান্দেকে অভিনন্দন জানান এবং গেলো বছর সভাপতির দায়িত্ব পালনকারী মারিয়া ফার্নান্দা এসপিনোসা গার্সেসের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসেরও প্রশংসা করেন তিনি।