পাহাড়ে প্রোপাগান্ডার রাজনীতি: কার স্বার্থে এই নাটক?
![]()
এবারের পয়লা বৈশাখেও ছাড় পেল না পার্বত্য চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ। বাঙালির প্রাণের উৎসবকে হাতিয়ার বানিয়ে আবারও চোখে পড়লো পরিচিত সেই পুরনো প্রোপাগান্ডা। রাঙামাটির চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায়ের দুই নাম্বার বউ ইয়েন ইয়েন ও কিছু বামপন্থী উগ্রবাদী গোষ্ঠী এবং কট্টর সাম্প্রদায়িক উপজাতীয় গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে বানানো প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে হাজির হলো রাজপথে। কোথাও লেখা “আদিবাসীর স্বীকৃতি চাই”, কোথাও “পাহাড়ে সেনাশাসন বন্ধ করো”, আবার কোথাও দেখা গেলো পাহাড়কে ফিলিস্তিনের সঙ্গে তুলনা করার মতো হাস্যকর ও উদ্দেশ্যমূলক দাবি।
প্রশ্ন হলো—এই ছেলেমানুষি আর কতদিন? আর এসব দেখে যারা বাহবা দেয়, তাদেরও জিজ্ঞেস করা উচিত—আপনারা আদতে পাহাড়ের কোন বাস্তবতা বোঝেন?
★পাহাড়ের বাস্তবতা:
আজ পার্বত্য চট্টগ্রামে সাধারণ একজন চাষী, ব্যবসায়ী বা গৃহিণীকেও বাঁচতে হয় চাঁদাবাজির ভয় নিয়ে। তিন পার্বত্য জেলায় বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি চলে। এই চাঁদাবাজি কারা করে জানেন?
যারা বলছে পাহাড় থেকে সেনা হঠাও, যারা বলছে সেনা শাসন বন্ধ করো, সেই তারাই পাহাড়ে চাঁদাবাজি করছে, সশস্ত্র অবস্থায় ভারী অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে।
আপনি যদি পাহাড়ে একটা পোষা মুরগিও বিক্রি করতে চান, আপনাকে পাহাড়ি উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিতে হবে। কলা, হলুদ, সবজি—সবজান্তা সন্ত্রাসীদের নজর এড়ায় না কিছুই। সন্তানদের বিয়েও করতে হলে দিতে হয় চাঁদা, নয়তো আসে হুমকি, কখনো বা অপহরণ।
সশস্ত্র উপজাতি গোষ্ঠীগুলোর ‘টহল দল’গুলো প্রতিদিন স্থানীয়দের বাড়ি থেকে জোর করে খাবার তুলে নেয়। রুটিনমাফিক চলে খাওয়াদাওয়া। প্রতিবাদ করলে চলে নির্যাতন। কোথাও কোনো নিরাপত্তা নেই। এই চক্রের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে চায় না, কারণ জানে—তারপর কী হয়।
★কে কার শত্রু?
এই যখন অবস্থা, তখন পাহাড়ে সেনা উপস্থিতির বিরোধিতা করে কার স্বার্থ হাসিল হচ্ছে? সেনাবাহিনী না থাকলে এই সাধারণ মানুষগুলোই তো প্রথমে পড়বে অস্ত্রধারী উপজাতীয় চাঁদাবাজ গোষ্ঠীগুলোর রোষানলে।
সেনাবাহিনী এখানে এসেছে যুদ্ধ করতে নয়, শান্তি রক্ষা করতে। স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, চিকিৎসা সেবা দিতে। কিন্তু প্রোপাগান্ডার রাজনীতি এমনভাবে সাজানো যে সত্য-মিথ্যার সীমারেখা অনেকেই ধরতে পারে না।
★প্রোপাগান্ডার পেছনে কারা?
প্রশ্ন জাগে—এই প্রোপাগান্ডা কারা চালায়? এরাই সেই গোষ্ঠী, যারা পাহাড়ের মানুষকে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রাখতে চায়। শিক্ষিত যুবকদের হাতে বই নয়, তুলে দিতে চায় অবৈধ বন্দুক। এই গোষ্ঠীর একটাই স্বার্থ—অশান্তি জিইয়ে রাখা, যাতে চাঁদাবাজি, দখল, অস্ত্রের রাজত্ব চলতে পারে নির্বিঘ্নে।
তাদের কাছে “আদিবাসী অধিকার” মানে সাধারণ পাহাড়ির অধিকারের নাম নয়, বরং নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থের ঢাল।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।
পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে পাহাড়িদের সব দাবি সরকার মেনে নিয়েছে, সেখানে সরকারের সাথে চুক্তি করেছে উপজাতি পরিচয়ে।
তাদের সব দাবি যখন মেনে নিয়েছে সরকার তখন তাদের হাতে আন্দোলনের নামে পাহাড় অশান্ত করার আর অস্ত্র রইলো না। এখন তাহলে কিভাবে পাহাড়কে অশান্ত করা যায়,? সেই চিন্তা থেকে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা মিলে ২০০৭ সাল থেকে জাতিসংঘ আইএলও কনভেনশন ঘোষণা করার পর থেকে নতুন করে আদিবাসী পরিচয় দাবি করে পাহাড়কে অশান্ত করতে উঠে পড়ে লেগে যায়।
এখন পাহাড়ে নতুন করে অশান্ত করার তাদের একটি হাতিয়ার সেটি হচ্ছে অযৌক্তিক ‘আদিবাসী দাবি’
★ সাধারণ পাহাড়িরা কি চায়?
পাহাড়ের সাধারণ মানুষ এসব চায় না। তারা চায় ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যাক, বাজারে শান্তিতে ব্যবসা করুক, ঘরে যেন ভয়ে না কাঁপতে হয়। তারা চায় শান্তি, নিরাপত্তা ও সম্মানের জীবন। তাদের আশা—রাষ্ট্র পাশে থাকবে, সেনাবাহিনী পাহাড়ে থাকবে, এবং পাহাড়ি উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দমন করে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনবে।
আসুন, আমরা প্রোপাগান্ডার মুখোশ ছিঁড়ে ফেলি। যারা পাহাড়কে অশান্ত করে দ্বিতীয় ফিলিস্তিন বানাতে চায়, তাদের চিহ্নিত করি। পাহাড়ের সাধারণ মানুষদের নামে যারা ষড়যন্ত্র করে, তাদের মুখোশ খুলে দেই। পাহাড় কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এটি বাংলাদেশের গর্ব, এবং পাহাড়ের মানুষও সমানভাবে বাংলাদেশের নাগরিক।
পাহাড়ে শান্তি চাই? তাহলে পাহাড়ি উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে।
-ফেসবুক থেকে নেয়া।