অপহৃত শিক্ষার্থীদের বাবা-মাকে গোপন স্থানে ডেকেছে অপহরণকারী সন্ত্রাসীরা!

নিউজ ডেস্ক
খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থী ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন তাদের অভিভাবকরা। অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- চারুকলা বিভাগের মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রিশন চাকমা, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো এবং চারুকলা বিভাগের অলড্রিন ত্রিপুরা। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে কয়েকজন জেএসএস সমর্থিত পিসিপির সদস্য রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ১টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ অপহৃতদের বাবা-মায়ের বরাতে বিষয়টি জানিয়েছেন।
চবি প্রক্টর রাইজিংবিডিকে বলেন, “চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর চারজনের বাবা-মার সাথে আমার কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, অপহৃতরা ভালো আছেন। অপহরণকারীরা তাদের বাবা-মাকে একটি গোপন স্থানে যেতে বলেছেন। তারা সে জায়গায় যাচ্ছে। তবে মুক্তিপণের বিষয়ে এখনো কথা হয়নি।”
এর আগে, বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে চবির পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়। একইসঙ্গে তাদের বহনকারী গাড়ির চালককেও অপহরণ করা হয়।
এ ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) ছাত্র সংগঠন ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) চবি ইউনিট বুধবার (১৬ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ-প্রসীত) দায়ী করেছে।
পিসিপি চবি ইউনিটের প্রচার সম্পাদক রিবেক চাকমা স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে অপহৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করে বলা হয়েছে, বিজু উৎসব উপলক্ষ্যে চবির পাঁচ শিক্ষার্থী বন্ধুদের সঙ্গে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে বেড়াতে যান। উৎসব শেষে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার উদ্দেশ্যে দীঘিনালা হয়ে খাগড়াছড়ি সদরে পৌঁছান। চট্টগ্রামগামী বাস না পাওয়ায় কুকিছড়া এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটান তারা। বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকালে অটোরিকশায় করে শহরে ফেরার পথে গিরিফুল এলাকায় পৌঁছালে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী তাদের অটোরিকশাসহ অপহরণ করে নিয়ে যায়।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, এ ঘটনা বিচ্ছিন্ন নয়। এর আগে ২০২৩ সালের ৬ আগস্ট রাঙামাটি সদর এলাকা থেকে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দুই নেত্রীকে ইউপিডিএেফর সশস্ত্র সদস্যরা অপহরণ করে। এর তিনদিন পর তাদের বেধড়ক মারধর করে ছেড়ে দিয়েছিল।
তবে অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইউপিডিএফ । সংগঠনটির জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা বলেন, “এ ঘটনার সঙ্গে ইউপিডিএফের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটি আমাদের বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হতে পারে।”
অপহৃত ছাত্রী দিব্যি চাকমার মা ভারতী দেওয়ান তার ফেসবুকে লিখেছেন, “খাগড়াছড়িতে আমার মেয়ে দিব্যি চাকমা তার সহপাঠীদের সঙ্গে বিজুতে গিয়েছিল। ফেরার পথে গিরিফুল থেকে অপহৃত হয়। প্লিজ, কারো মায়ের বুক খালি কইরেন না। দোষ থাকলে শাস্তি দিন, কিন্তু সন্তান হারানোর বেদনা যেন আর কোনো মায়ের কপালে না জোটে। আমি হাতজোড়ে অনুরোধ করছি, ফিরিয়ে দিন আমাদের সন্তানদের।”
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা বলেন, “চবি শিক্ষার্থীসহ ছয়জনকে অপহরণের কথা শুনেছি। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি সত্য বলে মনে হচ্ছে। এখনো কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। তবে আমরা খোঁজ নিচ্ছি এবং অপহৃতদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।”
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।