জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে দুই পাজেপ চেয়ারম্যানের বক্তব্যের প্রতিবাদ জেএসএস’র - Southeast Asia Journal

জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে দুই পাজেপ চেয়ারম্যানের বক্তব্যের প্রতিবাদ জেএসএস’র

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

গত ১৭ অক্টোবর রাঙ্গামাটিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের আগমন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক বিশেষ আইন-শৃঙ্খলা সভায় খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী ও রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমার জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি।

গত ২৮ অক্টোবর গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিবৃতিতে জেএসএস নেতৃবৃন্দ বলেন, পার্বত্য চুক্তির ফসল হিসেবে পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠিত হয়েছে এবং সেই পরিষদে আসীন হয়ে তাঁরা (কংজরী চৌধুরী ও বৃষকেতু চাকমা) আবার পার্বত্য চুক্তি পরিপন্থী মতামত প্রদান করছেন। চরম চুক্তি বিরোধী ও তাবেদারি দৃষ্টিভঙ্গি না হলে এধরনের আত্মঘাতী ও স্ববিরোধী মতামত কেউ তুলে ধরতে পারে না। জেএসএস নেতৃৃবৃন্দ বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীরা যাদের কাছ থেকে তিন পার্বত্য জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা শুনেছেন তারা কারা? বলা অপেক্ষা রাখে না যে, পার্বত্য জেলায় যারা প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন তারা বহিরাগত, সাম্প্রদায়িক ও পার্বত্য চুক্তি বিরোধী। সুতরাং সেইসব উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ে কি ধরনের মতামত আসবে তা বলাই বাহুল্য।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতা এবং খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের দুই চেয়ারম্যান যথাক্রমে কংজরী চৌধুরী ও বৃষকেতু চাকমা পার্বত্য চুক্তি ও চুক্তি মোতাবেক প্রণীত পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রণীত জাতীয় ভোটার তালিকা অনুযায়ী পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার দাবি জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। পার্বত্য চুক্তির ফসল হিসেবে পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠিত হয়েছে এবং সেই পরিষদে আসীন হয়ে তারা আবার পার্বত্য চুক্তি পরিপন্থী মতামত প্রদান করছেন। চরম চুক্তি বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি না হলে এধরনের আত্মঘাতী ও স্ববিরোধী মতামত কেউ তুলে ধরতে পারে না।

এর আগে গত ১৭ অক্টোবর রাঙামাটি জেলার বিশেষ আইন শৃঙ্খলা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন দাবি করেছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা। খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী তার জন্য নির্ধারিত বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন, ১৯৮৯ সালে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন হলেও পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর চুক্তি অনুযায়ী আলাদা ভোটার তালিকা তৈরি না হওয়ায় জেলা পরিষদগুলোর নির্বাচন হচ্ছে না, কিন্তু সরকার থেকে নির্বাচনের উদ্যেগও নেয়া হয়নি। দুই জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অনেকটা অভিযোগের সূরে বলেন, ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি রয়েছে অনেকের, যদি ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ এমনকি সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ভোটার তালিকা অনুযায়ী আপত্তি থাকা ব্যক্তিরা অংশ গ্রহন করতে পারেন এবং তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত হতে পারে তাহলে তারা জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না কেন? এসময় তারা বলেন, জেলা পরিষদগুলোর নির্বাচন হলে আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচন হবে, কারন জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্যরা আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য নির্বাচিত করবেন। দুই জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের দাবি, পাহাড়ে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি এসবের পেছনে আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। সভায় তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলা পরিষদের নির্বাচন দাবি করেন।

উল্লেখ্য, ঐ সভায় দুটি মন্ত্রনালয়ের আমন্ত্রন পত্র পেয়েও সভায় উপস্থিত থাকেন নি সন্তু লারমা ও তার কোন প্রতিনিধি।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সালে প্রথমবারের মতো তিন পার্বত্য জেলায় জনগণের অংশ গ্রহনে সরাসরি ভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান’সহ সদস্যরা নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোন সরকারই পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেনি। তবে এ নির্বাচনের মেয়াদ ছিলো পাঁচ বছর। বছরের পর বছর নির্বাচন না হওয়ার পেছনে প্রধান কারন হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়াতে জেলা পরিষদের নির্বাচনে বাঁধা দিচ্ছেন পার্বত্যাঞ্চলের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা।