পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের পরামর্শক কমিটিতে নেই বাঙালিদের প্রতিনিধিত্ব, ক্ষোভ বাড়ছে পাহাড়ে

পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের পরামর্শক কমিটিতে নেই বাঙালিদের প্রতিনিধিত্ব, ক্ষোভ বাড়ছে পাহাড়ে

পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের পরামর্শক কমিটিতে নেই বাঙালিদের প্রতিনিধিত্ব, ক্ষোভ বাড়ছে পাহাড়ে
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকারের স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। সম্প্রতি বোর্ডের পরামর্শক কমিটি গঠন করা হলেও সেখানে পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত বৃহত্তর জনগোষ্ঠি বাঙালিদের কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই পাহাড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনা তৈরি হয়েছে।

গত ১৩ আগস্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নাহিদ ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে এ কমিটি অনুমোদন করা হয়। নয় সদস্যবিশিষ্ট এ পরামর্শক কমিটিতে আটজনই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধি এবং একজন সরকারি কর্মকর্তা। অথচ তিন পার্বত্য জেলায় বাঙালিদের বসবাসের হার ৫০ শতাংশেরও বেশি।

সরকারি নথি অনুযায়ী, গঠিত কমিটিতে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, হেডম্যান, উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধি ও সরকারি-বেসরকারি খাতের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হলেও কোনো পার্বত্য বাঙালি জনপ্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ বা নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি জায়গা পাননি। ফলে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে।

এ প্রসঙ্গে লেখক ও গবেষক সৈয়দ ইবনে রহমত তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, “তাহলে কি ধরে নিতে হবে পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ড শুধুমাত্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য কাজ করছে? পাহাড়ের বৃহত্তর জনগোষ্ঠি বাঙালিদের বাদ দেওয়া হলো কেন?”

পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের পরামর্শক কমিটিতে নেই বাঙালিদের প্রতিনিধিত্ব, ক্ষোভ বাড়ছে পাহাড়ে

রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আল হক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “পার্বত্যাঞ্চলের উন্নয়ন কার্যক্রম যদি সবার জন্য হয়, তবে সেখানে জনগোষ্ঠির এক বিশাল অংশকে বাদ দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ধরনের বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত সামগ্রিক শান্তি ও উন্নয়নের পথে অন্তরায় হবে।”

বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসচিব নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমি কেবল প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। এই সিদ্ধান্ত উচ্চপর্যায়ের নীতিগত অনুমোদনের ভিত্তিতেই গৃহীত হয়েছে। আপনারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।”

তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) অনুপ কুমার চাকমা এবং মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।

স্থানীয় বাঙালি নেতৃবৃন্দ মনে করছেন, উন্নয়ন বোর্ডে এ ধরনের একপেশে কমিটি পাহাড়ি-বাঙালি সহাবস্থানের ক্ষেত্রে বিভাজনকে আরও প্রকট করবে। তাদের মতে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে যদি জনগোষ্ঠির মধ্যে বৈষম্য তৈরি হয় তবে তা শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও স্থায়ী সমাধানের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৬ সালে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এ অঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। তবে অতীতেও বোর্ডের কার্যক্রমে একপেশে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ওঠেছিল। এবারের পরামর্শক কমিটি সেই বিতর্ককে নতুন করে উসকে দিল।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।