পাকিস্তানি মন্ত্রীর সফরবিরোধী আন্দোলনে ভুয়া সেনা বিদ্রোহের ভিডিও প্রচার

পাকিস্তানি মন্ত্রীর সফরবিরোধী আন্দোলনে ভুয়া সেনা বিদ্রোহের ভিডিও প্রচার

পাকিস্তানি মন্ত্রীর সফরবিরোধী আন্দোলনে ভুয়া সেনা বিদ্রোহের ভিডিও প্রচার
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার দুই দিনের সফরে গত ২৩ আগস্ট দুপুরে ঢাকায় এসেছেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৩ আগস্ট অন্তত রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলাগুলির শব্দসমেত একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, “এই মুহুর্তে সাভার ক‍‍্যান্টরমেন্টে সেনাবাহিনীর মধ্যে বিদ্রোহ চলছে, পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরের প্রতিবাদে, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী এবং রাজাকারের বাচ্চাদের সাথে ব‍্যাপক সংঘর্ষ চলছে… ইউনুছ হঠাও বাংলাদেশ বাঁচাও। এগুলো দালাল মিডিয়া প্রচার করবে না।”

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উপরোল্লিখিত ভিডিওগুলো সম্মিলিতভাবে ৩০ হাজারেরও অধিক বার দেখা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে সেনাবাহিনীতে কোনো বিদ্রোহ হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি অন্তত গত সেপ্টেম্বর থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে গোলাগুলির দৃশ্য দাবিতে অনলাইনে বিদ্যমান রয়েছে।

অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চে ‘কামরুল হাসান’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বরে প্রচারিত একটি ভিডিও পোস্ট পাওয়া যায়। ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে হুবহু মিল পাওয়া যায়।

ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা হয়, “আবারোও অশান্ত পাহাড় | খাগড়াছড়িতে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, দোকান-বসতবাড়িতে আগুন। গভীর রাতে খাগড়াছড়ির দিঘিনালায় চারিদিকে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাহাড়ে আবারও অধিকসংখ্যক সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হউক।। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে শান্তি ফিরে আসুক পাহাড়ে।। ভালো থাকুক পার্বত্য জেলার শান্তিপ্রিয় সকল মানুষগুলো।।”

এছাড়াও, অনুসন্ধানে ভিডিওটি গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্ট থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ঘটনা দাবিতে পোস্ট হতে দেখা যায়।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ২০ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, “খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালায় পাহাড়ি ও বাঙালির সংঘর্ষের জের ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪) রাতভর জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে সদরসহ পুরো জেলায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাতের গোলাগুলি ও বিকেলের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।”

তবে, ভিডিওটির উৎস বা প্রেক্ষাপটের বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া না গেলেও এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের বা পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সাথে সম্পৃক্ত নয়।

সুতরাং, পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে সেনাবাহিনীর বিদ্রোহের দৃশ্য দাবিতে অন্তত ১১ মাস পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র