শহীদুল আলম কি আদিবাসী স্লোগানকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান?

মোঃ সাইফুল ইসলাম
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবারের একুশ পদক প্রদান অনুষ্ঠান ছিল ভিন্নমাত্রার। পদক তুলে দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এবার সংস্কৃতি ও শিক্ষায় একুশে পদক পেয়েছেন দেশের আলোচিত আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম।
নীল পাঞ্জাবি ও গলায় মাফলার জড়ানো শহিদুল আলম উপদেষ্টার কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন। তিনি জুলাই আন্দোলন ও পতিত সরকারের সময় প্রতিবাদী এক কণ্ঠ ছিলেন। একুশে পদক গ্রহণকালে তার পরনের নীল পাঞ্জাবির পেছনে লেখা ছিল ‘এই বিপ্লবও কারও বাপের না’। পাঞ্জাবির পেছনের লেখাটি বেশ নজর কেড়েছে নেটিজেনদের।
পাশাপাশি তার পাঞ্জাবির সামনেও একটি ছবি ছিলো। সেখানে ছিলো বহুল বিতর্কিত ও সংবিধান বিতর্কিত আদিবাসী শব্দের গ্রাফিতি।
সম্প্রতি পাঠ্যপুস্তকে যে শব্দটির ব্যবহার নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলো, বিতর্কের মুখে স্বয়ং এনসিটিবি পাঠ্যপুস্তক থেকে ওই গ্রাফিতি মুছে দিলো; যাকে কেন্দ্র এনসিটিবির সামনে পক্ষ-বিপক্ষের সংঘর্ষ হলো সেই আদিবাসী শব্দকে প্রতিষ্ঠা করতে শহিদুল আলমদের কেন এত আগ্রহ?
অথচ এই আদিবাসী শব্দ নিয়ে প্রতিবাদ করায় উগ্রবাদী ও বামপন্থিদের করা মামলায় নিরপরাধ বেশ কয়েকজন বাঙালি যুবককে জেলে যেতে হয়েছে। রাষ্ট্রবিরোধী শব্দটি নিয়ে প্রতিবাদ করায় জুলাই বিপ্লবের প্রথম কারাবরণকারী হিসেবে শাহাদাত ফরাজী সাকিবকে এত বড় ত্যাগ করতে হলো। অথচ, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি দাবী করা শহিদুল আলমরা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তিদের হাত থেকে পুরষ্কার গ্রহণকালে ঠিকই রাষ্টদ্রোহী শব্দকে প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার পুরস্কার নেয়ার অনুষ্ঠানে অনেকে সামনে ও পেছন দিক থেকে শহিদুল আলমের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন। অনেকে নিজ নিজ ওয়ালে আদিবাসী গ্রাফিতির ছবিটি শেয়ার করেছেন।
দেলোয়ার হোসেন খান নামের একজন তার ফেসবুক একাউন্টে শহীদুল আলমের ওই ছবি ব্যবহার করে লিখেছেন, ‘সমস্যা হইল বাংলাদেশের ‘আদিবাসি’ ব্যবসার উনি একজন বিশাল স্টেইক হোল্ডার। উনার বুকে দ্যাখেন ‘আদিবাসি’ কথাটা লেখা। রাখাল রাহার ফ্রেন্ড উনি।’
সাইফুল ইসলাম নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘চিনে রাখুন- কথিত ফটোগ্রাফার শহিদুল আলমকে। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে যারা ষ’ড়’য”ন্ত্রে লিপ্ত, তাদের মধ্যে আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক মেইনটেইন করা অন্যতম একজন কুশীলব– শহিদুল আলম। আজ প্রধান উপদেষ্টা হতে পুরস্কার গ্রহণ করতে গিয়ে রাষ্ট্রবিরোধী ষ”ড়”য”ন্ত্রে লিপ্ত এই শহিদুল আলম ‘আদিবাসী’ যুক্ত বিতর্কিত সেই গ্রাফিতি সম্বলিত পাঞ্জাবি পড়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বি”চ্ছি”ন্ন করারই ইঙ্গিত দিল!’
নেটিজেনদের দাবি, শহীদুল আলমের মতো সমাজের কিছু পরিচিত মুখ ও বামধারার রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে ব্যবহার করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল দেশে আদিবাসী শব্দকে প্রতিষ্ঠিত করে রাষ্ট্রকে হুমকির মুখে ঠেলে দিতে চাইছে।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, কিছুদিন পূর্বেও ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোকেরা নিজেদের উপজাতি স্বীকৃতি পর্যন্ত চাইতোনা কিংবা দাবি করতোনা। কিন্তু এখন এমন কি ঘটলো যে তারা আদিবাসী স্বীকৃতির জন্য উঠেপড়ে লেগেছে?
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।