বিশ্বব্যাপী শান্তির বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে বাংলাদেশের নারী সেনারা

বিশ্বব্যাপী শান্তির বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে বাংলাদেশের নারী সেনারা

বিশ্বব্যাপী শান্তির বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে বাংলাদেশের নারী সেনারা

ছবি- যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেল থেকে নেয়া।

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

রণাঙ্গন থেকে বৈশ্বিক পরিসর, শান্তির বার্তা পৌঁছে দেয়া আর মানব কল্যাণের ব্রত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের নারীরাও। সেনাবাহিনীর চৌকস নারীরাও কাঁধে তুলেছেন দেশমাতৃকাকে রক্ষার ভার। সীমানা পেরিয়ে শান্তি রক্ষায়ও তাদের ভূমিকা অতুলনীয়, চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকূলতা অতিক্রম করে লাল সবুজ পতাকাটি রাখতে চান সমুন্নত।

সমরে, শান্তিতে সর্বোচ্চ দেশকে এগিয়ে নিতে চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকূলতা দায়িত্বের সাথে মোকাবেলা করছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নারী সদস্যরা। দেশের গন্ডি পেরিয়ে শান্তিরক্ষী মিশনেও দারুণ ভাবে রাখছেন দক্ষতার স্বাক্ষর। বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশকে করছেন গৌরবান্বিত।

সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্বরত এক নারী সেনা কর্মকর্তা জানান, ‘এখানে আসলে নারী পিসকিপারদের প্রয়োজন তো অনেক বেশি। যেহেতু একজন নারীর কাছে একজন নারী তার মন খোলামেলা ভাবে সব কথাবার্তা বলতে পারেন। এখানে এসে যে স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলো আমি দেখেছি, নারীদের সেটা দেখে আমি আসলে আসলে এটা মানে আমাকে মনে অনেক কষ্ট দিয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে যে, এই আচরণ প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যগত দিক থেকে তাদের আরো অনেক বেশি উন্নতি এবং শিক্ষাগত দিক থেকে আরো বেশি উন্নতি প্রয়োজন।’

আরেক নারী সেনা কর্মকর্তা জানান, ‘এখানে বহু বিবাহ, তারপর বহু সন্তান এই প্রথাগুলো রয়েছে। পাশাপাশি তারা খুবই অল্প বয়সে মাতৃত্বের দিকে চলে যায়, যার ফলে দেখা যায় মাত্র ২৫ বছর বয়সেই একজন মায়ের পাঁচ থেকে ছয়টি বাচ্চা থাকে। তো তারা এমনিতেই দুর্বল থাকে, প্রপার মেডিকেল সাপোর্ট পায় না। আমরা এখানে নিজের দেশের পক্ষ থেকে এসেছি এদেরকে মেডিকেল সাপোর্ট দিতে।’

ভিন্ন দেশ অচেনা মানুষ বিপদ সংকুল পরিস্থিতিতে কেমন করে সামাল দেন, পেশাদারিত্ব একই সাথে লাল সবুজের বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে কেমন বোধ হয় জানতে চাওয়া সেই অকুত ভয়ে নারী সদস্যদের কাছে।

নারী সেনা কর্মকর্তার উত্তর, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত যে দেশগুলোতে পরিবার ও শিশু এবং নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং যৌন হয়রানীমূলক যে ধরনের সমস্যাগুলো থাকে, এসকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীরা প্রশংসনীয় অবদান রেখে চলেছে। এওয়ারনেস প্রোগ্রাম আমরা একটা ক্যাম্পেইন করেছি, এছাড়াও মেডিকেল ক্যাম্পেইন করা হয়েছে। তার মাধ্যমে ইতিপূর্বে উক্ত এলাকায় যত ধরনের যৌন নিপীড়ন এবং চাইল্ড সোলজারিং অথবা শিশুদের যত ধরনের নির্যাতন নিপীড়ন হয়েছিল সন্ত্রাস কার্যক্রমের মাধ্যমে, সেটা আমরা নিরসনের চেষ্টা করেছি এবং আমাদের ডেপ্লয়মেন্টের পরবর্তী সময় থেকে এই পর্যন্ত এখানে কোন ধরনের যৌন নিপীড়ন হয়নি, অর্থাৎ সেটি শূন্যে নেমে এসেছে।’

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

পেশাদারিত্বের সাথে মানবিক মূল্যবোধ আর ভালোবাসায় আপন করে নেন বিরোধপূর্ণ অঞ্চলের অধিবাসীদেরও। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের সংঘাতময় অঞ্চলে যৌন হয়রানি রুখতে সক্রিয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নারী সদস্যরা।

সেনা কর্মকর্তারা জানান, ‘নারী হিসেবে কখনোই পিছিয়ে থাকবো বা ভয় পেয়ে কোন কাজ এড়িয়ে যাব এরকমটা কখনোই হয় না, বরং কাজটাকে আরো ভালোভাবে কিভাবে করা যায় এটাকে একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েই কাজটাকে আমরা শেষ করার চেষ্টা করে থাকি। আমাদের মিশন গুলোতে যেখানেই আমাদের ফিমেল সোলজার এবং ফিমেল অফিসাররা আছেন সবাই অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে প্রতিটি কাজ একমপ্লিশ করে থাকেন। আমরা বাংলাদেশ হোক, বাইরে হোক, মিশনে হোক, যেখানেই হোক সব জায়গায় আমরা চ্যালেঞ্জগুলোকে অত্যন্ত সক্রিয়তার সাথে কিভাবে মোকাবেলা করা যায় সেই চেষ্টাটাই করে থাকি।’

চ্যালেঞ্জ নয়, পেশাদারিত্বকে প্রাধান্য দিয়ে দেশকে গৌরবান্বিত এবং মানুষকে ভালো রাখার প্রত্যয়ে এগিয়ে যেতে চায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নারী সদস্যরা। নারী মানেই পিছিয়ে থাকা নয় ভয়কে জয় করে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের নারীরাও তারই যেন অনন্য উদাহরণ সেন্ট্রাল আফ্রিকা রিপাবলিকের শান্তিরক্ষী মিশনে কর্মরত এই নারী সদস্যরা। যারা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা ইস্যুতে কাজ করছে নিরলসভাবে।