জুরাছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন, উপজাতি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হুঁশিয়ারি দীপংকর তালুকদারের - Southeast Asia Journal

জুরাছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন, উপজাতি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হুঁশিয়ারি দীপংকর তালুকদারের

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে দিয়ে রাঙামাটির জুড়াছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৮ অক্টোবর সোমবার সকালে উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সম্মেলনে নেতা-কর্মীদের নিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন রাঙামাটির স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এমপি।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রবর্তক চাকমার সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার চাকমা, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অভয় প্রকাশ চাকমা, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল মাওলা, জনসংখ্যা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, সদস্য বাবলা মিত্র, চারু বিকাশ চাকমা, সাখাওয়াত হোসেন রুবেল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এসময় অনুষ্ঠানে জেলা, উপজেলাসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজাতি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের প্রসঙ্গ টেনে দীপংকর তালুকদার এমপি বলেন, অবৈধ অস্ত্র দিয়ে যারা পাহাড়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে তাদের দিন শেষ হয়ে এসেছে।

পাহাড়ে উপজাতি অস্ত্রধারী আঞ্চলিক সংগঠনগুলো আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের জোর করে অস্ত্রের মুখে দল থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আপনারা দিন গননা শুরু করুন। অস্ত্রবাজী করে রাজনীতি করার দিন শেষ হয়ে এসেছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অসম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল সম্প্রদায়ের যে কোন রাজনৈতিক সংগঠন করার অধিকার রয়েছে। সম্প্রতি রাঙ্গামাটিতে আইন শৃঙ্খলা সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক উপজাতি আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহবানকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “সরকার উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের এখনো ক্ষমা করবে, যদি তারা অস্ত্রবাজী, চাঁদাবাজি, খুন-খারাবি ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।” তিনি বলেন, “চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন করে কখনো কেউ দাবী আদায় করতে পারেনি, বরং সরকারের সাথে বিদ্রোহ করা সব গোষ্ঠীই ইতিহাস থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।”

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন করতে সরকার আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে, যার সুফল বর্তমানে পাহাড়বাসী ভোগ করছে। যে কয়টি ধারা বাস্তবায়নের বাকি আছে সেগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আর এতে সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, পাহাড়ের রাজনীতিতে সর্বদা গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখা ও পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্রধারী উপজাতি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মূখ্য ভূমিকা রাখা দীপংকর তালুকদার ১৯৫২ সালের ১২ ডিসেম্বর পার্বত্য রাঙ্গামাটি জেলার চম্পকনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হেমন্ত প্রসাদ তালুকদার ও মাতার নাম বিদুৎপ্রভা তালুকদার। তিনি শিক্ষাজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৪ সালে ইংরেজিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ছাত্রজীবনে রাজনীতির সাথে যুক্ত হন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ১৯৭২-৭৩ মেয়াদে তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৩-৭৪ মেয়াদে তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর বাংলাদেশ আওয়ামীলগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৯৮ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স গঠিত হলে তাকে এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৯১ সালে তিনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ শিক্ষা কমিটি, সংস্থাপন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি ও জাতীয় সংসদ হাউজ কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান এবং ২০১৪ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন।

দীপংকর তালুকদার ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পার্বত্য রাঙ্গামাটি আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রথমবারেরমত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে একই আসন থেকে ১৯৯৬ সালে সপ্তম, ২০০৮ সালে নবম ও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন।