গৃহযুদ্ধের জন্য ব্রিটিশ আমলের ‘‌ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতিকে দায়ী করলেন জান্তাপ্রধান - Southeast Asia Journal

গৃহযুদ্ধের জন্য ব্রিটিশ আমলের ‘‌ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতিকে দায়ী করলেন জান্তাপ্রধান

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

মিয়ানমারের চলমান গৃহযুদ্ধের কারণ হিসেবে এবার ব্রিটিশদের ‘‌ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতিকে দায়ী করেছেন সামরিক সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং। অভ্যুত্থান-পরবর্তী ক্রমবর্ধমান সংকটের মধ্যে এমন মন্তব্য করলেন তিনি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সংকটের দায় এড়াতে এমন মন্তব্য করছেন জান্তাপ্রধান। খবর ইরাবতী।

ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে ১৯৪৭ সালের ৪ জানুয়ারি মুক্ত হয় মিয়ানমার। সে হিসেবে ৪ জানুয়ারি স্বাধীনতা দিবস পালন করে দেশটি। সম্প্রতি স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আগাম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন জান্তাপ্রধান। সেখানে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘‌ঔপনিবেশিক শাসকদের ‌ভাগ করো শাসন করো নীতি মিয়ানমারের জাতিগত গোষ্ঠীগুলোকে প্রভাবিত করেছে।’

নিজের শাসনামলে শান, চিন, কায়াহ ও রাখাইন প্রদেশের পাশাপাশি সাগাইং অঞ্চলের বেশ কয়েকটি বড় শহর ও শত শত সেনা চৌকির নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর এমন মন্তব্য করলেন জান্তাপ্রধান।

এদিকে ১৫ ডিসেম্বর ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে মিয়ানমার বিমান বাহিনী। সেখানে বক্তৃতাকালে উত্তরে শান প্রদেশজুড়ে ‘‌অসামান্য দক্ষতা’র জন্য বিমান বাহিনীর প্রশংসা করেন জান্তা সরকারের প্রধান।

বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধে বেশ কয়েক মাস ধরে বিমান বাহিনীর ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন মিন অং হ্লাইং। যদিও সেনাবাহিনীকে একসময় মিয়ানমারের সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে বিবেচনা করা হতো। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি, মিয়ানমারের সেই সেনাবাহিনী এখন অনেকটাই ক্ষয়প্রাপ্ত ও হতাশাগ্রস্ত। জেট ফাইটার ও গানশিপের বহর থাকা সত্ত্বেও জাতিগত গোষ্ঠী ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স অক্টোবরের শেষের দিকে অপারেশন ১০২৭ শুরু করার পর মাত্র দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ২১টি শহর এবং শত শত চৌকি হারিয়েছে শাসকগোষ্ঠী।

চলমান সেনা শাসনের শুরু থেকেই মিয়ানমারের ওপর পশ্চিমা চাপ অব্যাহত রয়েছে। চীন, রাশিয়া ও ভারত মিয়ানমারকে নানাভাবে সমর্থন দিলেও এ পরিস্থিতি তাদের বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। মূল্যস্ফীতি, মুদ্রার অবমূল্যায়ন জনজীবনের ওপর প্রভাব ফেলায় সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন কমেছে। অপারেশন ১০২৭-এর সাফল্যের পেছনে জান্তার ওপর থেকে চীনের সমর্থন সরিয়ে নেয়াকেও ‘‌কারণ’ হিসেবে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক।

যদিও ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স উত্তর শান প্রদেশে আক্রমণে চীনের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছে। গোষ্ঠীটির দাবি, কোনো দেশ বা সংস্থার প্রভাব ছিল না। তাদের একটাই উদ্দেশ্য, সামরিক স্বৈরাচারের মূলোৎপাটন করা।

এদিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটির বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। একই সঙ্গে জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ক্লাস্টার বোমাও ব্যবহার করছে জান্তা বাহিনী। ফলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির দলকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসে সামরিক জান্তা। এর পর থেকে তারা বিদ্রোহীদের প্রবল প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়।