পাহাড়ে কি সেনাশাসন চলছে?

পাহাড়ে কি সেনাশাসন চলছে?

পাহাড়ে কি সেনাশাসন চলছে?
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

বাইবার্স

পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি জনগোষ্ঠী এবং তাদের সাথে সুর মিলিয়ে দেশের কিছু প্রগতিশীল সংগঠন ও ব্যক্তিরা হরদম বলছেন, পাহাড়ে নাকি সেনাশাসন চলছে!
তারা বলছেন, কাশ্মিরে যেভাবে সেনাশাসন চলছে পার্বত্য চট্টগ্রামেও নাকি সেরকম সেনাশাসন চলমান রয়েছে।
এসব মাথামোটারা দেশের সূর্যসন্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বললেও পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কখনো কিছু বলে না। অথচ এসব সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো পাহাড়কে নরকে পরিণত করেছে!
আসলে পাহাড়ে কোন সেনাশাসন কখনোই হয়নি, এখনো হচ্ছে না। পুরো দেশে সেনাবাহিনী যেভাবে নিয়োজিত রয়েছে, ঠিক পাহাড়েও একইভাবে রয়েছে। তাহলে যারা বলে পাহাড়ে সেনাশাসন চলছে তাদের উদ্দেশ্য কি ? কেন তারা স্বাধীনতা,সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রতীক সেনাবাহিনীকে নিয়ে বিভিন্ন মিথ্যাচার ও অপবাদ রটাচ্ছে ?
পার্বত্য চট্টগ্রাম দেশের এক-দশমাংশ। বিশাল বিস্তৃত এই জনপদ নিয়ে ষড়যন্ত্রের কোন শেষ নেই। পাহাড় নিয়ে রয়েছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নানা ষড়যন্ত্র।
পাহাড়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন। যারা প্রতিনিয়ত গুম-খুন, হত্যা-রাহাজানি, চাঁদাবাজি করছে। পার্বত্য ৩টি জেলায় অবাধ বিচরণ হলো বিদেশি মদদপুষ্ট অস্ত্রধারীদের চমৎকার আস্তানা। যারা অত্যাধুনিক অস্ত্রসজ্জিত হয়ে নিয়মিত অপহরণ ও হত্যা করে রাষ্ট্রের নিরীহ নাগরিকদের। এর থেকে বাদ যায় না উপজাতীয়রাও! চাঁদাবাজি করে কেড়ে নিচ্ছে রাষ্ট্রের দরিদ্র নাগরিকের মুখের খাবার। সর্বদাই তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
আর নিয়মিত বাহিনী হিসেবে পুলিশের পক্ষে তাদের দমন করা সম্ভব নয়, পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রের পুলিশই পারবে না এরকম ভয়ংকর জঙ্গিদের দমন করতে। তাই তাদের দমনে অবশ্যই রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো স্বাধীনতা,সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রতীক সেনাবাহিনী মোতায়েন করা।
বিভিন্ন সময় পর্যটকদের অপহরণ করে বিশাল অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করে আঞ্চলিক গ্রুপগুলো। মুক্তিপণ না দিলে তাকে লাশ হয়ে ফিরে যেতে হবে। অন্য জেলাগুলো থেকে যারা পাহাড়ে ভ্রমণ করতে যায়, তারা বুঝতে পারে সেনাবাহিনী না থাকলে তাদের কেমন অবস্থা হতো। সেনাবাহিনী না থাকলে নিরাপত্তার অভাবে পাহাড়ে কেউ ভ্রমণ করতে সাহসও পেত না।
উপজাতীয় সন্ত্রাসী সংগঠন গুলোর একটাই লক্ষ্য, পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাষ্ট্র করা। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে সেই রাষ্ট্রের নাম দিয়েছে তারা ‘জুমল্যান্ড’। তারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে, এখানে বাঙালিদের থাকার কোন অধিকার নেই। পাহাড় একান্তই তাদের। এ পর্যন্ত ৬০ হাজারেও বেশি বাঙালি তাদের হাতে খুন হয়েছে। বাঙালি নিধনই তাদের সংগ্রাম।
পার্বত্য চট্টগ্রাম অতি দুর্গম অঞ্চল হওয়ায় এখানের সীমান্ত বেশি শক্তিশালী নয়। এখানে অনেক জায়গায় ভারত-মায়ানমারের সাথে সীমানা একদম ফাঁকা। ফলে অবাধে চলছে অস্ত্রপাচার। সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। এছাড়া মাদক, মানবপাচার ইত্যাদির অবাধ সুবিধা রয়েছে। এসব সমস্যা নির্মূলের জন্য সেনাবাহিনী ছাড়া আর কে আছে?
বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষকের অনেকে এ কথা বহুবার বলেছেন যে, সেনাবাহিনী না থাকলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বহু আগেই বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তো। এখনো চারদিক বারুদের গন্ধ, রক্তের হোলিখেলা, হিংসা-হানাহানি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি এবং গুম-খুন অপহরণের প্রতিযোগিতায় অশান্তির আগুন প্রতিনিয়ত আরো যেন উস্কে উঠছে।
পাহাড়ের নিরাপত্তা তথা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যখন সেনাবাহিনী জীবনবাজি রেখে কাজ করে যান, তখন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্য সেটা সবচে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তারা সাধারণ উপজাতি ও প্রগতিশীল মাথামোটাদের বুঝায় যে, পাহাড়ে সেনাশাসন চলছে, পাহাড় থেকে সেনা হটাতে হবে। কারণ, পাহাড় থেকে সেনা হটাতে পারলেই তাদের স্বপ্নের জুমল্যান্ড বাস্তবায়ন সম্ভব। সমতল ও বিশ্ববাসীকেও তারা জানানোর চেষ্টা করে যে, পাহাড়ে সেনাশাসন চলছে। কিন্তু দেশপ্রেমিক প্রতিটি মানুষ তাদের এই দুরভিসন্ধি ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরেছে।
পাহাড়ে সেনাবাহিনী ছিল আছে থাকবে। এমনকি নিরাপত্তার তাগিদে আরো সেনাক্যাম্প করতে হবে। কারণ, সেনাবাহিনী ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম হয়ে উঠবে তাদের স্বপ্নের ‘জুমল্যান্ড’।
  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।